বিশ্বখ্যাত র্যাপ সঙ্গীত শিল্পী এমিনেমের (Eminem) মুক্তি না পাওয়া গানের সুর চুরির অভিযোগে তার এক প্রাক্তন স্টুডিও প্রকৌশলীকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কৌঁসুলিরা এই খবর জানিয়েছেন।
খবর অনুযায়ী, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এমিনেমের গানগুলো অনলাইন এ বিক্রি করছিলেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, মিশিগানের হলি এলাকার বাসিন্দা ৪৬ বছর বয়সী জোসেফ স্ট্রেঞ্জ, ২০১৬ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত এমিনেমের একটি স্টুডিওতে প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করতেন। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, এমিনেম বা তার গানের স্বত্বাধিকারী ইন্টারস্কোপ ক্যাপিটাল লেবেল গ্রুপের অনুমতি ছাড়াই, ২৫টির বেশি গান অনলাইনে প্রচার করা হয়েছে।
এই গানগুলো সাধারণত এমিনেমের ডেট্রয়েটের স্টুডিওর সুরক্ষিত হার্ড ড্রাইভে সংরক্ষণ করা হতো।
যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি জুলি বেক জানিয়েছেন, স্ট্রেঞ্জের বিরুদ্ধে কপিরাইট লঙ্ঘন এবং চুরি করা মালামাল অন্য রাজ্যে পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
দোষী সাব্যস্ত হলে, স্ট্রেঞ্জের ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
এদিকে, স্ট্রেঞ্জের আইনজীবী ওয়াড ফিঙ্ক জানিয়েছেন, তার মক্কেল একজন বিবাহিত ব্যক্তি এবং তার দুটি সন্তান রয়েছে।
তিনি সঙ্গীতের সঙ্গে বহু বছর ধরে যুক্ত। ফিঙ্ক এই অভিযোগকে ‘অনুসন্ধান ছাড়া অভিযোগ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, যা এখনো কোনো গ্র্যান্ড জুরি বা বিচারকের দ্বারা পরীক্ষিত হয়নি।
তিনি আরও জানান, তারা বিষয়টি আদালতে মোকাবেলা করবেন এবং বিচারকদের প্রতি তাদের আস্থা রয়েছে।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ২০২১ সালে এমিনেমের স্টুডিওর কর্মীরা গান চুরির বিষয়ে ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (এফবিআই) জানায়।
তাদের ভাষ্যমতে, তখনও মুক্তি না পাওয়া কিছু গান বিভিন্ন ওয়েবসাইটে, যেমন- রেডডিট ও ইউটিউবে পাওয়া যাচ্ছিল।
পরে, অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৯ সালের অক্টোবর এবং ২০২০ সালের জানুয়ারিতে স্ট্রেঞ্জ যখন সাউন্ড প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করতেন, তখন তিনি সুরক্ষিত হার্ড ড্রাইভ থেকে ফাইলগুলো সরিয়ে নেন।
এরপরে, এমিনেমের সহযোগী ফ্রেড নাসের অনলাইনে ভক্তদের গানগুলো বিতরণ না করার জন্য সতর্ক করার পরেই, তদন্তকারীরা ক্রেতাদের চিহ্নিত করতে সক্ষম হন।
তদন্তে জানা গেছে, কানাডার একজন বাসিন্দা, যিনি ‘ডজা র্যাট’ নামে পরিচিত, তিনি স্ট্রেঞ্জ এর কাছ থেকে প্রায় ৫০ হাজার ডলারে (বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৫৪ লাখ টাকার সমান) ২৫টি গান কিনেছিলেন।
তিনি এমিনেমের ভক্তদের কাছ থেকে এই টাকা সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়া, স্ট্রেঞ্জ এমিনেমের হাতে লেখা গানের কিছু খাতা বিক্রি করারও চেষ্টা করছিলেন।
আরেকটি ঘটনায়, কানেকটিকাটের ‘এ টি এল’ নামের একজন ব্যক্তির নেতৃত্বে এমিনেমের কয়েকজন ভক্ত স্ট্রেঞ্জ এর কাছ থেকে প্রায় ১ হাজার ডলারে (বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার টাকার সমান) কয়েকটি গান কিনেছিলেন।
এফবিআই স্ট্রেঞ্জের বাড়ি থেকে এমিনেমের হাতে লেখা গানের খাতা, একটি অপ্রকাশিত ভিডিওর টেপ এবং ১ হাজার ২০০টির মতো অডিও ফাইল উদ্ধার করেছে।
অডিও ফাইলগুলোর মধ্যে এমিনেম এবং তার সঙ্গে কাজ করা শিল্পীদের কিছু গানের কাজ ছিল।
উল্লেখ্য, এমিনেম বর্তমানে বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় একজন শিল্পী।
২০২২ সালে তিনি রক অ্যান্ড রোল হল অফ ফেম-এ অন্তর্ভুক্ত হন এবং সম্প্রতি, তিনি ২০২৪ সালের এমটিভি ইএমএ-তে সেরা হিপ-হপ শিল্পী হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, কপিরাইট আইন লঙ্ঘনের ঘটনা গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়।
কপিরাইট আইন, যদিও সবসময় কঠোরভাবে প্রয়োগ হয় না, বাংলাদেশেও বিদ্যমান।
তথ্য সূত্র: সিএনএন