দক্ষিণ আফ্রিকার একটি গবেষণা কেন্দ্রে কর্মীদের মধ্যে মারামারির অভিযোগ উঠেছে, যা বর্তমানে তদন্তাধীন। অ্যান্টার্কটিকায় অবস্থিত এই গবেষণা কেন্দ্রটিতে কর্মী এবং কর্মকর্তাদের মধ্যে সহিংসতার অভিযোগ আসার পর কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে অভিযুক্ত কর্মীর মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে।
সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ আফ্রিকার ন্যাশনাল অ্যান্টার্কটিক এক্সপেডিশন (SANAE) IV ঘাঁটিতে কর্মরত এক ব্যক্তি তার সহকর্মীদের ওপর শারীরিক নির্যাতন ও যৌন হয়রানি করেছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ঘাঁটির প্রধানও রয়েছেন। এই ঘটনার পর ক্ষতিগ্রস্ত এক ব্যক্তি কর্তৃপক্ষের কাছে জরুরি ভিত্তিতে সাহায্য চেয়ে ই-মেইল করেন। তিনি তাঁর জীবন নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন।
ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন কর্মীদের মধ্যে একটি কাজ নিয়ে মতবিরোধ হয়। আবহাওয়ার ওপর নির্ভরশীল একটি কাজের সময়সূচী পরিবর্তন নিয়ে কর্মকর্তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। এরপরই একজন কর্মী আক্রমণাত্মক আচরণ করতে শুরু করেন।
আফ্রিকা থেকে প্রায় ৪,০০০ কিলোমিটার দূরে কুইন মাউড ল্যান্ড অঞ্চলে অবস্থিত এই গবেষণা কেন্দ্রটি। এটি একটি উজ্জ্বল কমলা রঙের কাঠামো, যা বরফের চাদরে মোড়া একটি পাথুরে স্থানে স্থাপন করা হয়েছে। ১৯৬০ সাল থেকে এখানে দক্ষিণ আফ্রিকার গবেষকরা জলবায়ু পর্যবেক্ষণ, বায়ুমণ্ডলীয় গবেষণা এবং ভূতাত্ত্বিক জরিপ সহ বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক তথ্য সংগ্রহ করে আসছেন।
বর্তমানে, এই ঘাঁটিতে নয়জন ক্রু সদস্য রয়েছেন, যাদের মধ্যে একজন চিকিৎসক, বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলীও আছেন। কর্মীদের দলটিতে ফেব্রুয়ারীর ১ তারিখে পাঠানো হয়েছিল এবং তাদের ১৩ মাস সেখানে থাকার কথা। ডিসেম্বরে তাদের জন্য রসদ সরবরাহ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার পরিবেশ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা ফেব্রুয়ারীর ২৭ তারিখে একটি বিপদ সংকেত পান। এরপরই তারা ঘটনার তদন্ত শুরু করে এবং ঘাঁটিতে শান্তি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি বর্তমানে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন এবং তার মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলছে। মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারা বদ্ধপরিকর।
অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশে প্রায় ৭০টি স্থায়ী গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে, যেগুলোতে বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা কাজ করেন। এই ধরনের ঘটনাগুলো বিরল হলেও, এমন প্রতিকূল পরিবেশে কাজ করার সময় কর্মীদের মধ্যে মানসিক চাপ সৃষ্টি হতে পারে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা