আর্কানসাসের আকাশে আবারও কালবৈশাখী, এক বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বার ঘূর্ণিঝড়ে ঘর হারালেন এক পরিবার।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরকানসাস অঙ্গরাজ্যে এক পরিবারের জীবনে যেন দুর্যোগ যেন পিছু ছাড়ছে না। গত এক বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে তাদের ঘর-বাড়ি লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, এর আগে আরও একবার, ২০০৬ সালে এই পরিবারের অন্য একটি বাড়িও ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়েছিল।
ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর আমেরিকার দেশটিতে। গত ১৫ই মার্চ, ২০২৪ তারিখে, শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে আরকানসাসের প্যারাগৌল্ড শহরে। মিস্তি ড্রোপ নামের এক নারীর পরিবার এই ঝড়ের শিকার হয়। ঝড়ের সময় তারা সবাই ঘরের একটি নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছিলেন, ফলে বড় ধরনের কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
তবে, তাদের বাড়িটি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে যায়।
মিস্তি জানান, গত বছরও একই ধরনের ঘূর্ণিঝড়ে তাদের বাড়ির ক্ষতি হয়েছিল। সে সময় তারা কোনোমতে রক্ষা পেলেও, এবার যেন সবকিছু শেষ হয়ে গেল। তার কথায়, “মনে হচ্ছিল যেন সবকিছু গিলে খাচ্ছে ঝড়টি। বাড়ির ছাদ উড়ে যাচ্ছিল, দেয়াল ভেঙে পড়ছিল। সেই ভয়ঙ্কর দৃশ্য সহজে ভোলা যায় না।”
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, এই ঘূর্ণিঝড়টি ছিল ‘ইএফ-২’ পর্যায়ের। অর্থাৎ, এর বাতাসের গতি ছিল ঘণ্টায় প্রায় ১৯৩ কিলোমিটার। এছাড়া, এর আগে ২০১৬ সালে যখন তাদের অন্য একটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, সেটির বাতাসের গতি ছিল ঘণ্টায় প্রায় ৩২২ কিলোমিটার, যা ‘ইএফ-৫’ পর্যায়ের কাছাকাছি ছিল।
এই ঘটনার আগে মিস্তির পরিবার সতর্ক ছিলেন। কারণ, আবহাওয়ার পূর্বাভাসে তারা জানতে পেরেছিলেন যে, ওই অঞ্চলে শক্তিশালী ঝড় আসতে পারে। তাই তারা আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন। গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র, ঔষধপত্র, এবং জরুরি জিনিসপত্র হাতের কাছে গুছিয়ে রেখেছিলেন তারা।
ঝড়ের সময় তারা একটি বাথরুমের ভেতরে আশ্রয় নেন, কারণ সেখানে কোনো জানালা ছিল না।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে শুধু ড্রোপ পরিবারই নয়, আরও অনেক পরিবার তাদের ঘরবাড়ি হারিয়েছে। পুরো আরকানসাস অঙ্গরাজ্য জুড়েই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিষয়টি বিবেচনা করলে, ঘূর্ণিঝড়ের ভয়াবহতা সহজেই অনুধাবন করা যায়। বাংলাদেশেও প্রায়ই ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে, যার ফলে ব্যাপক প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষতি হয়। ড্রোপ পরিবারের এই অভিজ্ঞতা যেন প্রকৃতির রুদ্র রূপের এক বাস্তব চিত্র।
এই কঠিন সময়ে, স্থানীয় প্রতিবেশীরা ড্রোপ পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তারা জানেন, এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে অনেক সময় লাগবে। কিন্তু তারা বলছেন, তারা এই এলাকা ছেড়ে কোথাও যাবেন না। তাদের শিকড় এখানে গেঁথে আছে, এখানকার মানুষের ভালোবাসা তাদের সাহস যোগাচ্ছে। তারা আবার নতুন করে সবকিছু শুরু করতে চান।
তথ্য সূত্র: সিএনএন