তুরস্কে, ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে দুর্নীতির অভিযোগে বিচারের জন্য আটক করার নির্দেশ দিয়েছে একটি আদালত। এই ঘটনার জেরে দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।
মেয়র ইমামোগলু বিরোধী দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা এবং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পরিচিত।
আদালতের এই সিদ্ধান্তের পর, ইমামোগলুকে দ্রুত মুক্তি দিতে হবে এমন দাবিতে প্রতিবাদকারীরা রাস্তায় নেমে আসে। বিক্ষোভকারীরা এটিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেছেন।
তাদের মতে, বিরোধী দলের জনপ্রিয়তা কমানোর জন্যই ক্ষমতাসীন সরকার এমনটা করছে।
আটক হওয়ার আগে, ইমামোগলু এই অভিযোগগুলোকে ভিত্তিহীন এবং তার বিরুদ্ধে “মিথ্যা প্রচারণা” হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা।
এদিকে, তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারার মেয়র মনসুর ইয়াস, যিনি ইমামোগলুর রাজনৈতিক মিত্র, আদালতের এই সিদ্ধান্তকে বিচার বিভাগের জন্য লজ্জাজনক বলে মন্তব্য করেছেন।
ইমামোগলুকে আটক করার সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া হিসেবে, প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) এবং ইউরোপীয় নেতারা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। বিক্ষোভকারীরাও তাদের প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছে।
শনিবার রাতে ইস্তাম্বুলে প্রায় তিন লক্ষ মানুষ বিক্ষোভ করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তবে, বিরোধী দলের দাবি, এই সংখ্যা ১০ লক্ষের কাছাকাছি ছিল। যদিও এই সংখ্যাটি যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
আদালতের এই সিদ্ধান্তের মধ্যেই, সিএইচপি’র সদস্যরা ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য ভোট দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ধারণা করা হচ্ছে, ইমামোগলুই এই নির্বাচনে দলের প্রার্থী হতে পারেন।
সিএইচপি’র পক্ষ থেকে দলের বাইরের সদস্যদেরও ভোট দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে, যাতে জনগণের মধ্যে প্রতিরোধের মনোভাব আরও বাড়ে। তুরস্কের ৮১টি প্রদেশে ভোট গ্রহণের জন্য সিএইচপি ৫,৬০০টি ভোটকেন্দ্র স্থাপন করেছে।
এছাড়াও, সন্ত্রাসবাদের সাথে সম্পর্কিত একটি পৃথক অভিযোগের বিষয়ে মেয়রকে বিচারিক নিয়ন্ত্রণের অধীনে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আদালত। এর ফলে সরকারের পক্ষ থেকে তুরস্কের বৃহত্তম শহরটি পরিচালনার জন্য কোনো ট্রাস্টি নিয়োগের সম্ভাবনা কমে এসেছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা