বর্তমান অস্থির পরিস্থিতিতে আর্থিক দুশ্চিন্তা কমাতে চান? তাহলে এই ৪টি বিষয় বিবেচনা করুন
বর্তমান বিশ্বে অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়ছে, যা মানুষের মনে আর্থিক নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করছে। এমন পরিস্থিতিতে কিভাবে নিজের আর্থিক সুরক্ষাকে শক্তিশালী করা যায়, সেই বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ নিচে দেওয়া হলো:
১. আপনার নিয়ন্ত্রণে যা আছে, সেদিকে মনোযোগ দিন:
বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি আপনার নিয়ন্ত্রণে নাও থাকতে পারে। বিশ্ব বাজারের ওঠা-নামা, মুদ্রাস্ফীতি, কিংবা রাজনৈতিক অস্থিরতা- এগুলোর ওপর আপনার সরাসরি কোনো হাত নেই। তবে, কিছু বিষয় অবশ্যই আপনার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
যেমন, আপনি কত টাকা সঞ্চয় করবেন, কোথায় বিনিয়োগ করবেন, অথবা জরুরি অবস্থার জন্য কত টাকা আলাদা করে রাখবেন- এই সিদ্ধান্তগুলো আপনার হাতে। তাই, বাইরের প্রতিকূলতা নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে, নিজের হাতে থাকা বিষয়গুলোর দিকে মনোযোগ দিন।
২. একটি জরুরি পরিকল্পনা তৈরি করুন:
আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি জরুরি পরিকল্পনা তৈরি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনার খারাপ পরিস্থিতিতে কেমন ব্যবস্থা নেবেন, তার একটি রূপরেখা তৈরি করুন।
যেমন, যদি আপনার চাকরি চলে যায়, তাহলে কি করবেন? এই পরিস্থিতিতে আপনার হাতে কত টাকা আছে? এছাড়া, সরকারি সুযোগ সুবিধা বা অন্য কোনো উৎস থেকে আপনি কত টাকা পেতে পারেন, তার একটি হিসাব রাখুন।
যদি আপনার হাতে অন্তত ৬ মাসের খরচ চালানোর মতো সঞ্চয় না থাকে, তাহলে প্রতি মাসে কিছু টাকা জমা করার চেষ্টা করুন। এছাড়া, আপনার অন্য কোনো আয়ের উৎস আছে কিনা, তা বিবেচনা করুন।
এই সময়ে জীবন বীমা এবং স্বাস্থ্য বীমার গুরুত্ব অনেক। এছাড়া, অপ্রত্যাশিত কোনো ঘটনার মোকাবিলার জন্য আপনার পর্যাপ্ত বীমা সুরক্ষা আছে কিনা, তা যাচাই করুন।
৩. বাজারের অস্থিরতাকে ভয় পাবেন না:
শেয়ার বাজারে ওঠা-নামা একটি স্বাভাবিক বিষয়। দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে, বাজারের এই অস্থিরতাকে ভয় না পেয়ে, ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে।
যখন বাজারের অবস্থা খারাপ থাকে, তখন ভালো মানের শেয়ার কম দামে কেনার সুযোগ পাওয়া যায়।
শেয়ার বাজারের উত্থান-পতন দেখে আতঙ্কিত না হয়ে, নিজের বিনিয়োগের দিকে নজর রাখুন। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাজারের পরিস্থিতি বিচার করে তাৎক্ষণিক কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক নয়।
৪. আপনার পোর্টফোলিও পর্যালোচনা করুন:
আপনার বিনিয়োগ পরিকল্পনা কেমন, তা নিয়মিতভাবে পর্যালোচনা করা উচিত। আপনার পোর্টফোলিওতে শেয়ার ও বন্ডের মধ্যে ব্যালেন্স আছে কিনা, তা দেখুন।
আপনার বিনিয়োগ কি বিভিন্ন খাতে বিস্তৃত? কোনো নির্দিষ্ট খাতে অতিরিক্ত বিনিয়োগ করা হলে, সেই খাতের অবনতি ঘটলে আপনার ক্ষতির সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাজারের অস্থিরতা সত্ত্বেও, দীর্ঘমেয়াদে শেয়ার বাজার ভালো রিটার্ন দিতে পারে। তাই, ধৈর্য ধরে বিনিয়োগ চালিয়ে যাওয়া উচিত।
সবশেষে, মনে রাখতে হবে, আর্থিক নিরাপত্তা একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। কোনো একটি নির্দিষ্ট কৌশল বা সিদ্ধান্তের মাধ্যমে রাতারাতি ধনী হওয়া সম্ভব নয়। নিয়মিত পরিকল্পনা, সঞ্চয় এবং সঠিক বিনিয়োগের মাধ্যমে আপনি আপনার ভবিষ্যৎকে সুরক্ষিত করতে পারেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন