মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কৃত দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত ইব্রাহিম রাসূল দেশে ফিরতেই পেলেন উষ্ণ সংবর্ধনা। শত শত সমর্থক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানাতে ভিড় করেন এবং তার সমর্থনে স্লোগান দেন।
প্রাক্তন এই রাষ্ট্রদূতকে ট্রাম্প প্রশাসন ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’ ঘোষণা করেছিল।
কেপটাউন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার পর রাসূল এবং তার স্ত্রী রোজিয়েদাকে জনতার ভিড় ঘিরে ধরে। তাদের বিমানবন্দরের বাইরে বের হতে পুলিশের সহায়তা নিতে হয়।
রাষ্ট্রদূত হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে দায়িত্ব পালনকালে রাসূলের কিছু মন্তব্যের জেরে এই সিদ্ধান্ত নেয় ট্রাম্প প্রশাসন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জনমিতিক পরিবর্তন এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) দক্ষিণ আফ্রিকার মামলা নিয়ে কথা বলেছিলেন।
ট্রাম্প প্রশাসন এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস ও ইরানের প্রতি সমর্থন এবং শ্বেতাঙ্গ বিরোধী নীতি গ্রহণের অভিযোগ আনে। এর ফলস্বরূপ, দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য সকল প্রকারের আর্থিক সাহায্যও বন্ধ করে দেওয়া হয়।
সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাসূল বলেন, “অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’ হিসেবে ঘোষিত হওয়ার অর্থ হলো আপনাকে অপমানিত করা। তবে যখন আপনারা এমন উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান, তখন আমি এটিকে সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করি।
তিনি আরও বলেন, “আমরা যুক্তরাষ্ট্র-বিরোধী নই। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ছিন্ন করারও কোনো ইচ্ছা নেই।
মার্কিন প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের পর, এটিই ছিল রাসূলের প্রথম কোনো জনসমক্ষে বক্তব্য। এর আগে, গত ১৪ মার্চ, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারকো রুবিও এক টুইট বার্তায় রাসূলকে ‘বর্ণবাদী রাজনীতিবিদ’ হিসেবে অভিহিত করেন এবং তার প্রতি ঘৃণা প্রকাশের অভিযোগ করেন।
রাসূল তার বক্তব্যে বলেন, তিনি তার আগের মন্তব্যের প্রতি এখনো শ্রদ্ধাশীল। তিনি মনে করেন, তার কথাগুলো ছিল যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক পরিবর্তনের বিশ্লেষণ।
তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার বুদ্ধিজীবী এবং রাজনৈতিক নেতাদের সতর্ক করতে চেয়েছিলেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে পরিবর্তন এসেছে। এটি আর বারাক ওবামা বা বিল ক্লিনটনের সময়কার যুক্তরাষ্ট্র নয়।
রাসূল আরও উল্লেখ করেন, গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের গণহত্যার অভিযোগ এনে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) দক্ষিণ আফ্রিকা যে মামলা করেছে, তা থেকে তারা কোনোভাবেই পিছপা হবে না।
তিনি বলেন, “আমরা ফিলিস্তিনিদের ত্যাগ করতে পারি না। তবে একই সঙ্গে, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কও ত্যাগ করব না। আমাদের এর জন্য লড়াই করতে হবে, তবে আমাদের সম্মান বজায় রাখতে হবে।
দক্ষিণ আফ্রিকার অনেকেই ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন এবং তাদের মুক্তির জন্য স্লোগান দিয়েছেন। বিমানবন্দরেও এর প্রতিফলন দেখা গেছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন