অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া রাজ্যে হৃদরোগে আক্রান্তদের বাঁচানোর হার বিশ্বে ঈর্ষণীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা ও সচেতনতার কারণে ভিক্টোরিয়ার হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে যাওয়া রোগীদের মধ্যে ৪১ শতাংশই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন।
এই হার বিশ্বে তৃতীয় সর্বোচ্চ, যা যুক্তরাষ্ট্র এর কিং কাউন্টি এবং ডেনমার্কের পরেই।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ভিক্টোরিয়ার এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যবস্থা। জনসাধারণের সচেতনতা বৃদ্ধি, সিপিআর প্রশিক্ষণ এবং অত্যাধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জামের সহজলভ্যতা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
উদাহরণস্বরূপ, ২০১৬ সালে জিমে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া ১৭ বছর বয়সী অস্টিন ব্লাইটের কথা বলা যায়। দ্রুত সিপিআর ও ডিফিব্রিলেটর ব্যবহারের ফলে তিনি প্রাণে বেঁচে যান। বর্তমানে তিনি সুস্থ জীবন যাপন করছেন।
ভিক্টোরিয়া রাজ্যে জনসাধারণের জন্য ৭,৫০০ এর বেশি ডিফিব্রিলেটর (defibrillator) স্থাপন করা হয়েছে, যা জরুরি পরিস্থিতিতে জীবন বাঁচানোর সম্ভাবনা অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে।
এছাড়া, অ্যাম্বুলেন্স ভিক্টোরিয়ার ‘গুডস্যাম’ (GoodSAM) অ্যাপ ব্যবহার করে স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে দ্রুত সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। এই অ্যাপের মাধ্যমে হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তির কাছাকাছি থাকা স্বেচ্ছাসেবকদের কাছে খবর পৌঁছে যায়, ফলে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব হয়।
গত এক বছরে এই অ্যাপের মাধ্যমে ১৭,৩২৭ জন স্বেচ্ছাসেবক যুক্ত হয়েছেন এবং ৭৯৩ টি ঘটনায় জরুরি সাহায্য পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
ভিক্টোরিয়ার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, জনগণের সচেতনতা ও দ্রুত পদক্ষেপের কারণেই এই সাফল্য এসেছে। দ্রুত সিপিআর ও ডিফিব্রিলেটর ব্যবহারের ফলে রোগীর জীবন বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে।
তারা আরও জানান, ২০২২-২৩ সালের তুলনায় ২০২৩-২৪ সালে এই হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, যা সত্যিই প্রশংসনীয়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ভিক্টোরিয়ার এই অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের জন্য শিক্ষণীয় হতে পারে। আমাদের দেশেও হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীদের জীবন বাঁচাতে হলে দ্রুত চিকিৎসা ও সচেতনতা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।
উন্নত প্রশিক্ষণ, জরুরি সরঞ্জামের সহজলভ্যতা এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করে আমরাও এই ধরনের সাফল্য অর্জন করতে পারি।
তথ্য সূত্র: The Guardian