বড় আকারের সানগ্লাস: ফ্যাশনের নতুন ধারা, ২০২৩ সালের গ্রীষ্ম ও বসন্তে আলোড়ন
রোদ থেকে চোখকে বাঁচাতে সানগ্লাসের ব্যবহার এখন খুবই পরিচিত। শুধু রোদ থেকে বাঁচাই নয়, এটি ফ্যাশনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশও বটে। সময়ের সাথে সাথে সানগ্লাসের আকারেও এসেছে পরিবর্তন।
কয়েক বছর আগেও ছোট আকারের সানগ্লাসের চল ছিল, তবে ফ্যাশন দুনিয়ায় এখন নতুন হাওয়া লেগেছে। ফ্যাশন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০২৩ সালের গ্রীষ্ম ও বসন্তে বড় আকারের সানগ্লাসের জয়জয়কার হবে।
ফ্যাশনের এই পরিবর্তন নতুন নয়। ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ইনুইটরা (Inuits) একসময় তিমির দাঁত দিয়ে তৈরি চশমা ব্যবহার করতেন, যা সূর্যের আলো থেকে তাদের চোখকে রক্ষা করত। দ্বাদশ শতকে চীনারা চোখের উজ্জ্বলতা কমাতে ধূমায়িত কাঁচের ব্যবহার শুরু করে।
এমনকি, ফরাসি রাজা চতুর্দশ লুইয়ের সময়েও সৌরগ্রহণ পর্যবেক্ষণের জন্য ফিল্টারযুক্ত টেলিস্কোপ ব্যবহার করা হতো।
বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে, ১৯৬০-এর দশকে জ্যাকি কেনেডি ওনাসিসের (Jacqueline Kennedy Onassis) হাত ধরে বিশাল আকারের সানগ্লাসের জনপ্রিয়তা বাড়ে। এরপর অড্রে হেপবার্ন, মাইলস ডেভিসের মতো তারকারা এই ফ্যাশনকে আরও জনপ্রিয় করেন।
সত্তরের দশকে এলটন জন-এর (Elton John) ফ্যাশনেও দেখা গেছে এই ধরনের সানগ্লাস। একবিংশ শতাব্দীতে লেডি গাগা-ও (Lady Gaga) এই ধারার প্রতি আকর্ষণ দেখিয়েছেন।
ফ্যাশন বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালের বসন্ত ও গ্রীষ্মের ফ্যাশন শো-গুলোতে বড় আকারের সানগ্লাসের আধিক্য দেখা গেছে। এই সময়ের জনপ্রিয় ডিজাইনগুলো দেখলে মনে হয় যেন ডিনার প্লেটের মতো বিশাল!
ফ্যাশন কনসালটেন্ট ফিয়োনা হার্টলি (Fiona Hartley) এই ধরনের সানগ্লাসকে ‘৯টা থেকে ৯টা’র সানগ্লাস হিসেবে অভিহিত করেছেন। অর্থাৎ, দিনের যেকোনো সময়েই পরার উপযোগী।
হার্টলির মতে, সানগ্লাস এমন হওয়া উচিত যা চোখের ভ্রু’র উপর থেকে শুরু করে নাকের নিচ পর্যন্ত বিস্তৃত।
এই সময়ের জনপ্রিয় ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলোও তাদের সংগ্রহে বড় আকারের সানগ্লাস যুক্ত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে অ্যারন এশ (Aaron Esh), ডিওর (Dior) এবং প্রাদা (Prada)।
প্রাদার তৈরি করা সানগ্লাসগুলো সাধারণ কাঠামোর চেয়ে কিছুটা ভিন্ন, যা ফ্যাশন সচেতনদের নজর কেড়েছে।
তবে, এই ফ্যাশন কতটা আমাদের দেশে প্রভাব ফেলবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। সাধারণত, আন্তর্জাতিক ফ্যাশন ট্রেন্ডগুলো ধীরে ধীরে আমাদের দেশেও আসে।
বড় আকারের সানগ্লাস হয়তো খুব দ্রুত জনপ্রিয় নাও হতে পারে, তবে ফ্যাশন সচেতনদের মধ্যে এটি নিয়ে আগ্রহ তৈরি হবে, এমনটা ধারণা করা যায়।
বাজারে বিভিন্ন দামের সানগ্লাস পাওয়া গেলেও, প্রাদার বিশেষ ধরনের সানগ্লাসের দাম প্রায় ১,৮০০ পাউন্ড।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান