মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর ইউরোপে সরবরাহ ও সমর্থন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সম্প্রতি নরওয়ের একটি জ্বালানি সরবরাহকারী সংস্থা যুক্তরাষ্ট্রের একটি যুদ্ধজাহাজকে তেল দিতে অস্বীকার করে। তাদের এই পদক্ষেপের কারণ হিসেবে জানা যায়, ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অসন্তুষ্টি।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের মতে, এমন ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের ইউরোপীয় মিত্রদের ওপর দেশটির নির্ভরতাকেই তুলে ধরে। অতীতেও এমন ঘটনা ঘটেছে, যখন ইউরোপের দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীকে সহায়তা করতে দ্বিধা বোধ করেছে।
উদাহরণস্বরূপ, ১৯৭৩ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময় গ্রিস এবং সাইপ্রাস ইসরায়েলকে সহায়তা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের জাহাজ ও বিমানের জ্বালানি সরবরাহ করতে রাজি হয়নি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে ইউরোপের নিরাপত্তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার দুর্বল হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন ডেনমার্ককে গ্রিনল্যান্ড দখলের হুমকি দিয়েছিল।
একই সঙ্গে, ন্যাটোতে (NATO) ইউরোপীয় মিত্রদের পর্যাপ্ত অর্থ খরচ না করার বিষয়েও সমালোচনা করা হয়, যা জোটের পারস্পরিক নিরাপত্তা চুক্তির প্রতি সন্দেহ তৈরি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী বর্তমানে ইউরোপে ব্যাপক সংখ্যক সেনা মোতায়েন রেখেছে। তাদের রক্ষণাবেক্ষণ এবং সরঞ্জামের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ হয়। তবে, এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতির ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
কেউ কেউ মনে করেন, রাশিয়াকে চীনের থেকে দূরে সরিয়ে নেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রশাসনের আগ্রহ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ইউরোপে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিগুলোর গুরুত্ব হ্রাস পেতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপ ইউরোপের নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে। এর ফলে, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সরবরাহ এবং সমর্থন আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে। এমনকি, ভবিষ্যতে মিত্র দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা কমে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা