বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন (World Athletics) নারী ক্রীড়াবিদদের লিঙ্গ নির্ধারণের জন্য নতুন এক পদ্ধতি চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন থেকে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের আগে তাদের শরীর থেকে নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হবে।
ফেডারেশনের প্রধান সেবাস্টিয়ান কোয়ে’র মতে, এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হলো নারী ক্রীড়ার সম্মান ও স্বকীয়তা রক্ষা করা।
খেলার জগতে নারী-পুরুষের বিভাজন সব সময়ই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। খেলোয়াড়দের লিঙ্গ নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়, বিশেষ করে যখন কেউ শারীরিক গঠন বা হরমোনের কারণে অন্যদের থেকে সুবিধা পান।
বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন তাই এই ধরনের সমস্যা সমাধানে একটি নতুন উপায় খুঁজছিল। সম্প্রতি তারা ঘোষণা করেছে যে, নারী বিভাগে অংশ নিতে আগ্রহী ক্রীড়াবিদদের গাল থেকে নমুনা (cheek swab) নেওয়া হবে।
এই পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের জৈবিক লিঙ্গ নিশ্চিত করা হবে।
ফেডারেশন জানিয়েছে, তারা খুব শীঘ্রই এই পরীক্ষার প্রক্রিয়া শুরু করতে চায়। সম্ভবত, সেপ্টেম্বরে টোকিওতে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের আগেই এটি কার্যকর করা হবে।
সেবাস্টিয়ান কোয়ে বলেছেন, “আমরা চাই প্রতিযোগিতার স্বচ্ছতা বজায় থাকুক, এবং নারীদের খেলাধুলায় তাদের অধিকার সুরক্ষিত হোক।”
পরীক্ষার কারণ হিসেবে ফেডারেশন জানাচ্ছে, কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, শুধু টেস্টোস্টেরন কমানোর মাধ্যমে পুরুষাঙ্গসম্পন্ন খেলোয়াড়দের সুবিধা পুরোপুরি কমানো সম্ভব হয় না। এমনকি বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছানোর আগেই কিছু ক্ষেত্রে শারীরিক সক্ষমতার পার্থক্য দেখা যায়।
পরীক্ষার জন্য এসআরওয়াই (SRY) জিন-এর উপস্থিতি যাচাই করা হবে, যা সাধারণত পুরুষের শরীরে থাকে এবং পুরুষ বৈশিষ্ট্য নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এই সিদ্ধান্তের আগে বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনা করেছে। বিভিন্ন দেশের ৭০টির বেশি দল তাদের মতামত দিয়েছে।
এই পরীক্ষার পদ্ধতি নিয়ে অনেকে তাদের উদ্বেগের কথা জানালেও, ফেডারেশন জানিয়েছে তারা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (International Olympic Committee – IOC) প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছিলেন সেবাস্টিয়ান কোয়ে।
নির্বাচনে তিনি নারী ক্রীড়াবিদদের অধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনেও এর প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষ করে, যারা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে চান, তাদের জন্য এই নিয়ম সম্পর্কে অবগত থাকা জরুরি।
এটি নিশ্চিত করবে যে, আমাদের দেশের নারী ক্রীড়াবিদগণ বিশ্ব মঞ্চে ন্যায্য সুযোগ পান।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান