ক্যাথলিক চার্চের যাজকদের দ্বারা শিশুদের উপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগগুলো নতুন করে সামনে আনতে একটি ডাটাবেস তৈরি করেছে নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের সংগঠন। ‘সারভাইভার্স নেটওয়ার্ক অফ দোজ অ্যাবিউজড বাই প্রিস্টস’ (এসএনএপি) নামক এই সংগঠনটি ‘কনক্লেভ ওয়াচ’ নামে একটি ডাটাবেস তৈরি করেছে, যেখানে কার্ডিনালদের (ক্যাথলিক চার্চের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা) যৌন নির্যাতনের অভিযোগগুলি কিভাবে তারা পরিচালনা করেছেন, সেই সংক্রান্ত তথ্য রাখা হবে।
সংগঠনটির প্রধান উদ্দেশ্য হল, এই ডাটাবেসের মাধ্যমে আগামী পোপ নির্বাচনের সময় কার্ডিনালদের অতীত কার্যক্রমের উপর আলোকপাত করা। এসএনএপি মনে করে, এই ডাটাবেস সম্ভাব্য পোপ প্রার্থীদের ব্যাপারে স্বচ্ছ ধারণা দেবে, যা পরবর্তী পোপ নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এই ঘটনার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে, এসএনএপি পোপ ফ্রান্সিসকে একটি চিঠি লিখেছে, যেখানে তারা সারা বিশ্বে এই ধরনের ঘটনায় ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। বর্তমানে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে কঠোর নিয়ম-কানুন বিদ্যমান। এসএনএপি চায়, সারা বিশ্বেও যেন এই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়, যেখানে দোষী যাজকদের পদ থেকে সরানো হবে এবং যারা এই ধরনের ঘটনায় জড়িত, তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে।
এসএনএপি-র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা এই ডাটাবেসে প্রাথমিকভাবে ৬ জন কার্ডিনালের তথ্য যুক্ত করেছে। খুব শীঘ্রই আরও বেশি কার্ডিনালের তথ্য এতে যুক্ত করা হবে। এই ডাটাবেসে কার্ডিনালদের বিরুদ্ধে ওঠা যৌন নির্যাতনের অভিযোগগুলি লুকানোর চেষ্টা, অথবা এই সংক্রান্ত মামলাগুলি তারা কিভাবে পরিচালনা করেছেন, সেই সম্পর্কিত তথ্য থাকবে। একইসঙ্গে, এসএনএপি-র পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি তারা সমর্থন করেন কিনা, সেই বিষয়টিও এখানে দেখা হবে।
সংগঠনটি মনে করে, পোপ ফ্রান্সিস বর্তমানে শারীরিক সুস্থতার দিকে মনোযোগ দিচ্ছেন। তাই তারা চান, খুব দ্রুত যেন পোপের কাছে তাদের প্রস্তাবটি পৌঁছে দেওয়া হয়। চিলির একজন ভুক্তভোগী জুয়ান কার্লোস ক্রুজকে (Juan Carlos Cruz) পোপ এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ করেছেন। আশা করা হচ্ছে, তিনিই এই চিঠিটি পোপের কাছে পৌঁছে দেবেন।
এসএনএপি-র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের এই উদ্যোগ শিশুদের অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কারণ, পোপ ফেব্রুয়ারী মাসে শিশুদের অধিকার নিয়ে একটি অ্যাপোস্টলিক এক্সহর্টেশন (apostolic exhortation) তৈরির ঘোষণা করেছিলেন। তারা চান, তাদের প্রস্তাবিত ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি যেন এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস