হলিউডের অন্দরমহলের গল্প নিয়ে নতুন সিরিজ ‘দ্য স্টুডিও’, নির্মাতাদের চোখে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব।
হলিউড, এক স্বপ্নের জগৎ। রুপালি পর্দার ঝলমলে দুনিয়ার আড়ালে লুকিয়ে থাকে ক্ষমতা, অর্থ আর টিকে থাকার লড়াইয়ের এক কঠিন চিত্র। সেই চিত্রই এবার তুলে ধরতে আসছে অ্যাপল টিভি প্লাস-এর নতুন সিরিজ ‘দ্য স্টুডিও’।
কমেডি ঘরানার এই সিরিজে অভিনয় করেছেন সেথ রোগেন, ব্রায়ান ক্র্যানস্টন, ক্যাথরিন হ্যান, আইক বারিনহোল্টজ, এবং চেজ সুই ওয়ান্ডার্স-এর মতো তারকারা। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, সিরিজটি নির্মাণ করেছেন সেথ রোগেন এবং ইভান গোল্ডবার্গ।
‘দ্য স্টুডিও’ মূলত একজন স্টুডিও প্রধানের গল্প, যিনি প্রতিনিয়ত হলিউডের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে ক্ষমতার লড়াইয়ে লিপ্ত হন।
সিরিজের প্রধান চরিত্র ম্যাট রেমিকে দেখা যাবে, যিনি একটি কাল্পনিক স্টুডিও, ‘কন্টিনেন্টাল স্টুডিও’-র প্রধান। একদিকে সিনেমার প্রতি তাঁর ভালোবাসা, অন্যদিকে ব্যবসার হিসাব মেলানোর চাপ—এই দুইয়ের মধ্যে তিনি কিভাবে ভারসাম্য রক্ষা করেন, সেটাই গল্পের মূল বিষয়।
সিনেমার জগতে টিকে থাকতে হলে, প্রায়ই তাঁকে এমন সব সিদ্ধান্তের মুখোমুখি হতে হয়, যা হয়তো তাঁর ব্যক্তিগত পছন্দের সঙ্গে মেলে না।
উদাহরণস্বরূপ, ‘চায়নাটাউন’-এর মতো সিনেমা বানানোর পরিবর্তে, তাঁকে ‘কুল-এইড’ (Kool-Aid) নিয়ে সিনেমা বানানোর কথা ভাবতে হয়।
এই সিরিজে হলিউডের বর্তমান অবস্থার একটি প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। যেখানে সিনেমার ব্যবসায়িক দিকটি ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে, এবং সৃজনশীলতার স্বাধীনতা কমে আসছে।
দর্শক এখন সিনেমা হলের চেয়ে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে বেশি ঝুঁকছে। তাই নির্মাতাদের আগ্রহ এখন মৌলিক গল্পের চেয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি, সুপারহিরো এবং হরর ঘরানার সিনেমার দিকে।
সিরিজটি নির্মাণ করতে গিয়ে নির্মাতারা তাঁদের নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করেছেন। তাঁদের মতে, হলিউডে এমন অনেক মানুষ আছেন, যারা সিনেমাকে ভালোবাসেন, আবার ব্যবসার হিসাবও রাখেন।
সিনেমায় ভালো কিছু করার চেষ্টা যেমন থাকে, তেমনই থাকে টিকে থাকার লড়াই। এই সিরিজের গল্প সেই দ্বিধা, সেই দ্বন্দ্বের গল্প।
সিরিজে শুধু ক্ষমতার লড়াই নয়, বরং হলিউডের সোনালী দিনের প্রতি নস্টালজিয়াও প্রকাশ করা হয়েছে।
এমন একটি পর্ব রয়েছে, যেখানে একটি সিনেমার ‘রিল’ হারিয়ে যাওয়ার গল্পকে ‘চায়নাটাউন’-এর স্টাইলে উপস্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও, সিনেমায় পরিচালক মার্টিন স্কোরসেসি, এবং নেটফ্লিক্স-এর প্রধান টেড সারান্ডোস-এর মতো খ্যাতনামা ব্যক্তিদের দেখা যাবে।
তবে, সিরিজটি শুধু হতাশাজনক চিত্রই নয়, বরং হলিউডের প্রতি নির্মাতাদের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশও বটে। যদিও সিনেমা ব্যবসায় টিকে থাকা বেশ কঠিন, তবুও তাঁরা বিশ্বাস করেন, ভালো সিনেমা তৈরির সম্ভাবনা এখনো রয়েছে।
তথ্য সূত্র: