যুক্তরাষ্ট্রের একটি খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা খাতে বরাদ্দকৃত প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার তহবিল বাতিলের অভিযোগে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে শিক্ষাবিদদের সংগঠন।
ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত কিছু বিক্ষোভের জেরে এই অর্থ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
শিক্ষাবিদদের সংগঠনগুলোর অভিযোগ, এর মাধ্যমে মূলত মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করতে চাইছে ট্রাম্প প্রশাসন, যা যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের পরিপন্থী।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা খাতে বরাদ্দকৃত ফেডারেল ফান্ড বন্ধ করার পেছনে মূল কারণ ছিল গত বছর গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে অনুষ্ঠিত হওয়া ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভ।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবশ্য শুরু থেকেই জানিয়েছিল, তারা কোনো প্রকার বিদ্বেষমূলক আচরণের বিরুদ্ধে।
কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন মনে করে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু সদস্যের কার্যক্রম তাদের নীতির পরিপন্থী।
মামলার বাদী সংগঠনগুলোর দাবি, এই তহবিল বাতিলের কারণে ইতিমধ্যে আলঝাইমার রোগ, গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্য এবং ক্যান্সারের মতো গুরুত্বপূর্ণ রোগ প্রতিরোধের গবেষণা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট অনুযায়ী, তাদের ব্যয়ের প্রায় ৪০ শতাংশ রোগী সেবা ও গবেষণায় এবং ৪০ শতাংশের বেশি শিক্ষাখাতে ব্যয় হয়।
এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনের নির্দেশনার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তহবিল পুনরুদ্ধারের জন্য কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কিছু নীতিগত পরিবর্তন এনেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক তাদের পাঠ্যক্রমও পর্যালোচনা করবে।
তবে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানালেও শিক্ষাবিদদের সংগঠনগুলো মনে করে, এর মাধ্যমে সরকারের হস্তক্ষেপ আরও বাড়বে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসনের পরিপন্থী।
মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ ছিল বেআইনি এবং এর মাধ্যমে ভীতি প্রদর্শনের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
শুধু তাই নয়, ফিলিস্তিন ইস্যুতে যারা মুখ খুলছেন, তাদের ওপর নিপীড়ন চালানো হচ্ছে এবং এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ও গবেষকদেরও টার্গেট করা হচ্ছে।
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তন ছাত্র, যিনি ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন, তার গ্রিন কার্ডও বাতিল করা হয়েছে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন