উত্তর ক্যারোলিনা এবং সাউথ ক্যারোলিনায় দাবানল, ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন বাসিন্দারা।
যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর ও দক্ষিণ ক্যারোলিনায় ভয়াবহ দাবানলের সৃষ্টি হয়েছে। তীব্র খরা, শক্তিশালী বাতাস এবং ঘূর্ণিঝড় হেলেনের কারণে গাছপালা উপড়ে যাওয়ার ফলে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা জানাচ্ছে, দাবানলের কারণে এরই মধ্যে অনেক মানুষকে তাদের বাড়িঘর ছাড়তে হয়েছে।
উত্তর ক্যারোলিনার পোল্ক কাউন্টিতে প্রায় ১৬৫টি বাড়ি থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এখানে তিনটি পৃথক দাবানলে প্রায় ২৩ বর্গকিলোমিটার এলাকা পুড়ে গেছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হচ্ছে। স্থানীয় ফরেস্ট সার্ভিস সূত্রে খবর, দুটি অগ্নিকাণ্ড এখনো নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি।
ব্ল্যাক কোভ ফায়ার নামের একটি বড় অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে একটি বিদ্যুতের খুঁটি থেকে। তবে, অন্য দুটি আগুনের কারণ এখনো জানা যায়নি এবং তদন্ত চলছে।
অন্যদিকে, প্রতিবেশী হেন্ডারসন কাউন্টিতেও বাসিন্দাদের স্বেচ্ছায় এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং জরুরি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। দমকল কর্মীরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। কর্মকর্তাদের মতে, আগুন যাতে কোনো বাড়িতে ছড়িয়ে না পড়ে, সেদিকে তারা বিশেষভাবে নজর রাখছেন।
সাউথ ক্যারোলিনার পার্বত্য অঞ্চলেও দুটি দাবানল জ্বলছে। টেবিল রক স্টেট পার্ক এবং পার্সিমোন রিজের কাছের আগুন প্রায় ৬ বর্গকিলোমিটার এলাকা পুড়িয়ে দিয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই দুটি আগুনের সূত্রপাত হয়েছে মানুষের অসাবধানতার কারণে। সোমবার রাতের হিসাব অনুযায়ী, কোনো আগুনই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি।
এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে, সপ্তাহান্তে প্রায় ১০০টি বাড়ির বাসিন্দাদের স্বেচ্ছায় সরে যেতে বলা হয়েছিল। মঙ্গলবার সকালে, ফরেস্ট্রি কমিশন ঘোষণা করেছে যে পার্সিমোন রিজের কাছাকাছি এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা আপাতত নেই, তবে বাসিন্দাদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে, যাতে প্রয়োজন হলে দ্রুত স্থান ত্যাগ করা যায়।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, আগামী কয়েক দিন আবহাওয়া উদ্বেগের কারণ হতে পারে। বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকার সম্ভাবনা রয়েছে এবং দমকা হাওয়া অব্যাহত থাকলে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত বছর ঘূর্ণিঝড় হেলেনের কারণে প্রচুর গাছপালা ভেঙে পড়েছিল, যা এখন শুকনো মৌসুমে দ্রুত আগুন ছড়াতে সহায়ক হচ্ছে। উত্তর ক্যারোলিনা স্টেট ইউনিভার্সিটির বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক রবার্ট শেলার জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ের পরে শুষ্ক আবহাওয়া দেখা দিলে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া পর্যবেক্ষকরা জানিয়েছেন, ক্যারোলিনার বেশিরভাগ এলাকাতেই স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত হয়েছে এবং মাঝারি থেকে তীব্র খরা চলছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসেসিয়েটেড প্রেস