মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, প্রাক্তন ট্রাম্প প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের একটি গোপনীয় বার্তা আদান-প্রদানের ঘটনা বর্তমানে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
‘সিগন্যাল’ নামক একটি এনক্রিপ্টেড মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে এই কথোপকথনগুলো চালানো হতো।
জানা গেছে, এই গোপন আলোচনাগুলোতে ইয়েমেনে সামরিক হামলার পরিকল্পনা নিয়েও কথা হয়েছিল।
তবে, সব থেকে চাঞ্চল্যকর বিষয় হলো, সেই গোপন গ্রুপের সঙ্গে অনিচ্ছাকৃতভাবে একজন সাংবাদিক যুক্ত হয়ে পড়েন, আর তাতেই ফাঁস হয়ে যায় স্পর্শকাতর তথ্য।
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরেই রিপাবলিকান দলের শীর্ষস্থানীয় সিনেটররা ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি তুলেছেন।
তাদের আশঙ্কা, এই ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বড় ধরনের সমস্যা তৈরি করতে পারে।
আলাস্কার রিপাবলিকান সিনেটর লিসা মারকোওস্কি এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, “যখন আপনারা আপনাদের কাজগুলো গুছিয়ে করতে পারেন না, তখনই এমনটা ঘটে।”
আলোচিত ‘সিগন্যাল’ গ্রুপে ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স, প্রতিরক্ষা সচিব, পিট হেগসেথ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওসহ আরও কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন।
মূলত, ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালানোর পরিকল্পনা নিয়েই তাদের মধ্যে আলোচনা চলছিল।
তবে, কিভাবে একজন সাংবাদিক, এলি গোল্ডবার্গ, এই গোপন গ্রুপে যুক্ত হলেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ, যিনি সম্ভবত অনিচ্ছাকৃতভাবে সাংবাদিক গোল্ডবার্গকে গ্রুপে যুক্ত করেছিলেন, তিনি ঘটনার সম্পূর্ণ দায় নিজের কাঁধে নিয়েছেন।
যদিও, তিনি বিস্তারিতভাবে জানাননি কিভাবে এই ঘটনা ঘটলো।
ঘটনার পর রিপাবলিকান দলের মধ্যে বিভেদ দেখা দিয়েছে।
দলের কট্টরপন্থী অংশ ওয়াল্টজের প্রশাসনিক পদ বহাল রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ট্রাম্পপন্থী রিপাবলিকানরা পররাষ্ট্রনীতির এই আগ্রাসী অবস্থানের বিরোধী।
ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য ওয়াল্টজকে সমর্থন করে তাকে ‘খুব ভালো মানুষ’ বলে মন্তব্য করেছেন।
এই ঘটনার জেরে মার্কিন ফেডারেল রেকর্ড আইন লঙ্ঘিত হয়েছে কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
‘আমেরিকান ওভারসাইট’ নামক একটি অলাভজনক সংস্থা, ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে এবং আদালতের কাছে এই বিষয়ে তথ্য সংরক্ষণের আবেদন জানিয়েছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান