পেরুর রাজনৈতিক অস্থিরতা কমাতে ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসে সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট দিনা বোয়ার্তে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি এবং দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার প্রেক্ষাপটে এই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে।
গত কয়েক বছরে পেরুতে সরকারপ্রধানের পদে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। বিগত সাত বছরে দেশটি ছয় জন প্রেসিডেন্ট দেখেছে। এই অস্থিরতা কাটাতে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সুসংহত করতেই নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
২০২২ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট পেদ্রো ক্যাস্তিলোকে অভিশংসনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করার পর দিনা বোয়ার্তে দেশটির প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তবে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে প্রেসিডেন্ট বোয়ার্তের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগের তদন্ত চলছে। এছাড়াও, তার বিরুদ্ধে বিলাসবহুল ঘড়ি সহ বিভিন্ন সম্পদ গোপন করার অভিযোগও রয়েছে।
পেরুর রাজধানীতে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। এর আগে, ২০১৬ সালের মার্চ মাসে একজন জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পীকে হত্যার ঘটনা ঘটে, যা ব্যাপক বিক্ষোভের জন্ম দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হওয়ায় দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বরখাস্ত করা হয়।
এদিকে, মানবাধিকার সংস্থাগুলো ২০২০-২৩ সাল পর্যন্ত সরকার বিরোধী বিক্ষোভে নিহত ৪৯ জনের ঘটনায় প্রেসিডেন্ট বোয়ার্তের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনেছে। যদিও প্রেসিডেন্ট বোয়ার্তে এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী আলবার্তো ওতারোলা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাদের দাবি, বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সরকারের পদক্ষেপ ছিল দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই নির্বাচনের মাধ্যমে পেরুর মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবে এবং এর মাধ্যমে দেশে স্থিতিশীলতা ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রেসিডেন্ট বোয়ার্তেও আশা প্রকাশ করেছেন যে, এই নির্বাচন দেশের জন্য ‘স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতি’ তৈরি করবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন