ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু (Benjamin Netanyahu) দেশটির বিরোধী দলগুলোর বিরুদ্ধে ‘বিশৃঙ্খলা’ তৈরির অভিযোগ এনেছেন। সম্প্রতি সরকার বিরোধী বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এই মন্তব্য করেন।
অন্যদিকে, বিরোধী দলীয় নেতা ইয়ার লাপিদ (Yair Lapid) সুপ্রিম কোর্টের রায় সরকার না মানলে ‘বিদ্রোহের’ ডাক দিয়েছেন।
বুধবার পার্লামেন্টে এক ভাষণে নেতানিয়াহু বিরোধী দলকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আপনারা সেই পুরনো, হাস্যকর স্লোগানগুলোই আওড়াচ্ছেন— ‘গণতন্ত্রের সমাপ্তি’। আমি বলতে চাই, গণতন্ত্র বিপদের মুখে নেই, বরং আমলাতন্ত্রের ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যাচ্ছে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “যুদ্ধ চলাকালীন আপনারা কি সরকারের কাজে বাধা দেওয়া বন্ধ করতে পারেন? আপনারা কি রাস্তায় বিদ্বেষ, ঘৃণা ও বিশৃঙ্খলা ছড়ানো বন্ধ করতে পারেন?”
গত কয়েক দিন ধরে ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থানে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভকারীরা নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকে দুর্বল করার অভিযোগ এনেছেন।
তাদের অভিযোগ, তিনি অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেটের প্রধান রোনেন বারকে (Ronen Bar) অপসারণ করতে চাইছেন এবং গাজায় বন্দী ইসরায়েলিদের বিষয়ে কোনো গুরুত্ব না দিয়েই হামলা চালাচ্ছেন।
নেতানিয়াহু এবং শিন বেট প্রধান রোনেন বার-এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। বার-এর বিরুদ্ধে ঘুষের তদন্তের অভিযোগ আনা হয়েছে, যেখানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এই দুই ব্যক্তির মধ্যে মতবিরোধের মূল কারণ হল, গত বছরের ৭ অক্টোবরের হামাস হামলা প্রতিরোধে ব্যর্থতা।
গত সপ্তাহে শুরু হওয়া বিক্ষোভগুলো নেতানিয়াহু বিরোধী বিভিন্ন দল ও গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে। তাদের অভিযোগ, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী যেকোনো মূল্যে ক্ষমতায় থাকতে চাইছেন।
বিরোধী দলীয় নেতা ইয়ার লাপিদ, সুপ্রিম কোর্টের রায়কে সম্মান জানানোর জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “যে সরকার আদালতের কথা শোনে না, সেটি একটি অপরাধী সরকার এবং তাকে মেনে চলা উচিত নয়।
যদি সরকার সুপ্রিম কোর্টের রায় বাস্তবায়ন না করে, তাহলে আমাদের দেশ অচল করে দিতে হবে, এবং তাহলে সবকিছু শেষ হয়ে যাবে।”
এদিকে, ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল বাহারাভ-মিয়ারার (Baharav-Miara) বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পাস করেছে। অ্যাটর্নি জেনারেলকে অপসারণের এটি প্রথম পদক্ষেপ।
নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে, সরকার এবং অ্যাটর্নি জেনারেলের মধ্যে ‘গুরুত্বপূর্ণ এবং দীর্ঘমেয়াদী মতপার্থক্য’ রয়েছে।
রোনেন বার-কে বরখাস্ত করার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রাথমিক রায়ের পর, অ্যাটর্নি জেনারেল মন্তব্য করেন যে নেতানিয়াহু নতুন অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা প্রধান নিয়োগ করতে পারবেন না এবং এই পদে ‘ক্ষতি হয় এমন কোনো পদক্ষেপ’ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা