মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শীর্ষ উপদেষ্টাদের ব্যক্তিগত তথ্য অনলাইনে উন্মোচিত হয়েছে। জার্মান সংবাদমাধ্যম ডের স্পিগেল-এর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, উপদেষ্টারা একটি সিগন্যাল গ্রুপ চ্যাটে মিলিত হয়ে আলোচনার মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করতেন, যেখানে তাদের ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, যাদের ডেটা ফাঁস হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালজ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ এবং জাতীয় গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালক তুলসী গাবার্ড। ফাঁস হওয়া তথ্যের মধ্যে রয়েছে তাদের মোবাইল নম্বর, ইমেইল ঠিকানা এবং কিছু ক্ষেত্রে পাসওয়ার্ডও।
বাণিজ্যিক ডেটা-অনুসন্ধান পরিষেবা এবং হ্যাক করা ডেটা ডাম্পের মাধ্যমে এই তথ্যগুলো পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হেগসেথের মোবাইল নম্বর ও ইমেল ঠিকানা খুঁজে বের করা তুলনামূলকভাবে সহজ ছিল। একটি বাণিজ্যিক পরিষেবা ব্যবহার করে তার ইমেল ঠিকানা এবং কিছু ক্ষেত্রে পাসওয়ার্ডও খুঁজে পাওয়া গেছে, যা ২০টির বেশি ডেটা ফাঁসে বিদ্যমান ছিল।
এমনকি, এই ইমেল ঠিকানাটি কয়েক দিন আগেও ব্যবহৃত হয়েছে বলেও জানা গেছে। হেগসেথের মোবাইল নম্বরটি হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত ছিল, যা তিনি সম্প্রতি মুছে দিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গাবার্ড এবং ওয়ালজের নম্বরগুলি হোয়াটসঅ্যাপ ও সিগন্যালের মতো মেসেজিং সার্ভিসের সঙ্গে যুক্ত ছিল। ফলে তাদের ডিভাইসে স্পাইওয়্যার ইনস্টল করার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
ডের স্পিগেল আরও জানিয়েছে, ১৫ই মার্চ ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ওপর মার্কিন বিমান হামলার পরিকল্পনার সময় বিদেশি এজেন্টরা তাদের ওপর নজরদারি করতে পারতো।
ঘটনার সূত্রে জানা যায়, ওয়ালজ অনিচ্ছাকৃতভাবে আটলান্টিক ম্যাগাজিনের সাংবাদিক জেফরি গোল্ডবার্গকে চ্যাট গ্রুপে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। বুধবার ম্যাগাজিনটি আলোচনার বিস্তারিত প্রকাশ করে।
এই ঘটনার পর ট্রাম্প হেগসেথের পক্ষ নিয়ে এটিকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে মন্তব্য করেছেন। তবে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ জানিয়েছে, জার্মান ম্যাগাজিনে উল্লিখিত ওয়ালজের অ্যাকাউন্ট ও পাসওয়ার্ডগুলো ২০১৯ সালে পরিবর্তন করা হয়েছে।
এই ঘটনার জেরে ডেটা সুরক্ষার বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় এসেছে। বাংলাদেশেও ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
তথ্য প্রযুক্তি আইনের দুর্বলতা এবং সচেতনতার অভাবের কারণে প্রায়ই ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের ঘটনা ঘটে, যা উদ্বেগের কারণ।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান