আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি ফুটবলার দিয়েগো ম্যারাডোনার মৃত্যুরহস্য নিয়ে বুয়েনস আইরেসে বিচার শুরু হয়েছে। তাঁর মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে গঠিত মেডিকেল টিমের সাত সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, যেখানে তাঁদের যথাযথ চিকিৎসার অভাবে ম্যারাডোনার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
আদালতে ম্যারাডোনার ময়না তদন্তের ফলাফল উপস্থাপন করা হয়েছে, যেখানে তাঁর মৃত্যুর আগে অন্তত ১২ ঘণ্টা তীব্র যন্ত্রণার শিকার হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ম্যারাডোনার হৃদপিণ্ডের অবস্থা ছিল খুবই খারাপ, যা তাঁর চরম কষ্টের ইঙ্গিত দেয়। তাঁর হৃদযন্ত্রে ফ্যাট এবং রক্তের জমাট বাঁধার কারণে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি মারা যান।
অভিযোগ উঠেছে, ম্যারাডোনার ব্যক্তিগত চিকিৎসকসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁর স্বাস্থ্যগত অবস্থার প্রতি যথেষ্ট মনোযোগ দেননি। ঘটনার সময় তাঁর চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা নিউরোসার্জন, সাইকিয়াট্রিস্ট, মনোবিদ এবং নার্সসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ‘হত্যাকাণ্ডের সম্ভাবনা’র অভিযোগ আনা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে আট থেকে পঁচিশ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
২০২০ সালে ৬০ বছর বয়সে বুয়েনস আইরেসের একটি আবাসিক কমপ্লেক্সে মারা যান ম্যারাডোনা। মৃত্যুর কয়েক সপ্তাহ আগে তাঁর মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। তদন্তকারীরা বলছেন, ম্যারাডোনার মৃত্যুর আগে তাঁর স্বাস্থ্যসেবায় গুরুতর ত্রুটি ছিল। এই মামলার শুনানিতে প্রায় ১২০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে এবং ধারণা করা হচ্ছে, আগামী জুলাই মাস পর্যন্ত এই বিচার প্রক্রিয়া চলতে পারে।
ফুটবল বিশ্বে ম্যারাডোনার অবদান অনস্বীকার্য। তাঁর অকাল মৃত্যু শুধু আর্জেন্টিনায় নয়, সারা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীদের জন্য গভীর শোকের কারণ হয়েছিল। এই বিচার প্রক্রিয়া ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার পাশাপাশি, চিকিৎসা পেশার সঙ্গে জড়িতদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা