ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত মিয়ানমার: মৃতের সংখ্যা ১,৬০০ ছাড়িয়েছে, সাহায্যের আবেদন রেড ক্রসের
মিয়ানমারে শুক্রবার আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। রবিবার পর্যন্ত পাওয়া খবরে জানা গেছে, ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ১,৬৪৪ জনে পৌঁছেছে।
আহত হয়েছেন ৩,৪0৮ জন, আর নিখোঁজ রয়েছেন ১৩৯ জন। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল দেশটির মধ্যাঞ্চলে, যার ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে।
ভূমিকম্পের কারণে দেশটির বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়।
শহরটির কাছাকাছি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল হওয়ায় এখানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পুরাতন আভা সেতু, মান্দালয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থানেও ফাটল ধরেছে। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে বহু বাড়িঘর।
অন্যদিকে, প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ডেও ভূমিকম্পের প্রভাব পড়েছে। তবে সেখানে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম।
ব্যাংককের আশেপাশের এলাকাগুলোতে ১৮ জন নিহত এবং ৩৩ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া, এখনো ৭৮ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে উদ্ধারকাজ এখনো চলছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় অনেক দুর্গম এলাকার খবর পাওয়া যাচ্ছে না।
ভূমিকম্পের কারণে সাগাইং, নেপিদো, মাগুয়ে, বাগো এবং শান প্রদেশেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় টেলিযোগাযোগের অভাব মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি করছে।
ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক রেড ক্রস জরুরি ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করেছে।
সংস্থাটি আগামী ২৪ মাসের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত ১ লক্ষ মানুষকে সহায়তার জন্য প্রায় ১১৩.৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১,২০০ কোটি টাকার বেশি) সংগ্রহের আবেদন জানিয়েছে।
এই অর্থের মাধ্যমে প্রায় ২০ হাজার পরিবারের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মিয়ানমার উত্তর-দক্ষিণ সাগাইং ফল্টের উপর অবস্থিত, যা ভারত ও সুন্দা প্লেটকে পৃথক করেছে।
এই কারণে দেশটি ভূমিকম্প প্রবণ। বাংলাদেশেরও ভূমিকম্পের ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে অবস্থান এবং ভবিষ্যতে এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের আরও সচেতন ও প্রস্তুত থাকতে হবে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস