অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে ‘নজিরবিহীন’ বন্যা, কয়েক সপ্তাহ ধরে চলতে পারে দুর্যোগ।
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড রাজ্যে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট বন্যায় সেখানকার জনজীবন বিপর্যস্ত। রাস্তাঘাট জলমগ্ন হয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
এরই মধ্যে রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলে গত ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে, যার কারণে বাসিন্দাদের বাড়িঘর ছাড়তে হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বন্যা পরিস্থিতি আগামী কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, কোনো কোনো এলাকায় কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ৬০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা ওই অঞ্চলের গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাতের প্রায় দ্বিগুণ।
আবহাওয়াবিদরা সতর্ক করে বলেছেন, বন্যার কারণে কৃষিজমির ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে এবং গবাদি পশুহানির আশঙ্কা রয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়া ব্যুরো জানিয়েছে, বন্যার পানি ধীরে ধীরে নিম্নাঞ্চলে নামতে শুরু করেছে, যা আরও কয়েক সপ্তাহ ধরে চলতে পারে।
বর্তমানে কুইন্সল্যান্ডের মধ্যাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের কিছু অংশে বন্যা সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষের ধারণা, এই অঞ্চলে আরও বৃষ্টি হতে পারে।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডেভিড ক্রিসাফুলি জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের চেয়ে অনেক বেশি ভয়াবহ।
জিন্দা, স্টোনহ্যাঞ্জ এবং উইন্ডোরা শহরগুলোতে পানির স্তর ১৯’শ ৭৪ সালের ভয়াবহ বন্যাকেও ছাড়িয়ে গেছে।
মুখ্যমন্ত্রী কৃষিখাতে ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া রাজ্যবাসীর জন্য সহায়তার অঙ্গীকার করেছেন এবং গবাদি পশুহানির সংখ্যা ‘হাজারের কাছাকাছি’ হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
কুইন্সল্যান্ডে চলতি বছর বেশ কয়েকটি মারাত্মক ঝড় আঘাত হেনেছে।
মার্চ মাসের শুরুতে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় আলফ্রেড রাজ্যের পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানে, যার ফলে বহু বাড়িঘর বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে।
১৯৭৪ সালের ঘূর্ণিঝড় জোয়ের পর আলফ্রেড ছিল এই অঞ্চলে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়।
এছাড়া, বছরের শুরুতে ৭৩৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে রেকর্ড বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যায় অন্তত একজন নিহত হয় এবং হাজার হাজার মানুষকে তাদের বাড়িঘর ছাড়তে হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৃষ্টিপাতের তীব্রতা বাড়ছে, যা ভবিষ্যতে আরও মারাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণ হতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন