হোয়াইট হাউজ সংবাদদাতাদের নৈশভোজে কমেডিয়ানের পারফর্ম্যান্স বাতিল, বিতর্ক তুঙ্গে।
প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হওয়া হোয়াইট হাউজ সংবাদদাতাদের নৈশভোজ, যা সাংবাদিক ও সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের উদ্দেশ্যে আয়োজিত হয়, এবার বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে এই অনুষ্ঠানটি নতুন করে আলোচনার জন্ম দেয়।
এবারকার অনুষ্ঠানে কমেডিয়ান আম্বার রুফিনকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও, শেষ পর্যন্ত তাঁর পারফর্ম্যান্স বাতিল করা হয়েছে।
হোয়াইট হাউজ সংবাদদাতাদের অ্যাসোসিয়েশন (WHCA) এই নৈশভোজের আয়োজন করে থাকে।
সাধারণত, নৈশভোজের শেষে একজন কমেডিয়ান আমন্ত্রিত হয়ে থাকেন, যিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির হাস্যরসাত্মক সমালোচনা করেন।
কিন্তু এবারকার অনুষ্ঠানে কমেডি পরিবেশনের পরিকল্পনা বাতিল করা হয়েছে, যা অনেকের মনে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
জানা গেছে, হোয়াইট হাউজ কর্তৃপক্ষ আমন্ত্রিত কমেডিয়ানের সমালোচনা করায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সংস্থাগুলোর মতে, হোয়াইট হাউজের এই সিদ্ধান্তের মূল কারণ হলো, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করার প্রচেষ্টা।
অতীতেও ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের হোয়াইট হাউজে প্রবেশাধিকার সীমিত করা হয়েছিল। এমনকি, এয়ার ফোর্স ওয়ান এবং ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার নিয়েও বিতর্ক দেখা দেয়।
এবারকার ঘটনা সেই বিতর্কেরই একটি অংশ।
WHCA-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অনুষ্ঠানের মূল লক্ষ্য বিভেদ তৈরি করা নয়, বরং সাংবাদিকদের কাজের স্বীকৃতি দেওয়া।
কিন্তু এই সিদ্ধান্তের ফলে অনেকে মনে করছেন, প্রেস অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃপক্ষের এই নমনীয়তা আসলে সরকারের ইচ্ছার কাছে নতি স্বীকারের সামিল।
কমেডিয়ান আম্বার রুফিন এর আগে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ট্রাম্প প্রশাসনকে ব্যঙ্গ করে আলোচনায় এসেছিলেন।
২০১৬ সালের নির্বাচনে বারাক ওবামার আমলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্মসনদ নিয়ে বিতর্কের প্রতি ইঙ্গিত করে রুফিন হাস্যরস তৈরি করেছিলেন।
হোয়াইট হাউজের এই নৈশভোজ দীর্ঘদিন ধরেই সমালোচিত হচ্ছে।
অনেকে মনে করেন, সরকার ও সংবাদ মাধ্যমের মধ্যে এই ধরনের আনুষ্ঠানিকতা থাকা উচিত কিনা, তা নিয়ে নতুন করে ভাবা দরকার।
সাংবাদিকদের স্বাধীনতা এবং সরকারের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক নিয়েও এখানে প্রশ্ন উঠেছে।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সরকারের মধ্যেকার সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
অনেকেই মনে করেন, সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করার পরিবেশ তৈরি করা জরুরি।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।