শিরোনাম: ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা: বিশ্ব বাণিজ্য এবং বাংলাদেশের জন্য এর প্রভাব
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছেন, যা তিনি ‘মুক্তি দিবস’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তার এই পদক্ষেপ বিশ্ব বাণিজ্য এবং বিশেষ করে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কেমন প্রভাব ফেলতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে।
ট্রাম্পের এই শুল্কনীতি মূলত বিদেশি পণ্যের ওপর কর আরোপের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়ানোর উদ্দেশ্যে প্রণীত। তিনি মনে করেন, এর ফলে আমেরিকান কোম্পানিগুলো আরও সুবিধা পাবে এবং বিনিয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি হবে। তবে, অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, এর ফলে সাধারণ আমেরিকান নাগরিকদের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়বে এবং তাদের আয় কমে যেতে পারে।
ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের সম্ভাব্য প্রভাবগুলো হলো: পরিবারের বাজেট, বিশ্ব অর্থনীতির গতিপথ এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের কাঠামোতে পরিবর্তন আসতে পারে। এই পরিস্থিতিতে অন্য দেশগুলোও তাদের প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে।
ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী, তিনি বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করতে চান। এর মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, দক্ষিণ কোরিয়া, ব্রাজিল এবং ভারতের মতো দেশগুলোও রয়েছে। তিনি এমন ‘পাল্টা শুল্ক’ আরোপের কথাও বলেছেন, যা অন্য দেশগুলোর সাথে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতির সমতা আনবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই শুল্কনীতি বিশ্ব অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এর ফলে পণ্যের দাম বাড়তে পারে এবং ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, গাড়ির দাম বাড়লে তা ভোক্তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে। তাছাড়াও, কাঁচামাল এবং নির্মাণ সামগ্রীর দাম বাড়লে বাড়ি নির্মাণ আরও কঠিন হয়ে পড়বে।
অন্যদিকে, এই শুল্ক নীতির কারণে অন্য দেশগুলোও পাল্টা ব্যবস্থা নিতে পারে। এরই মধ্যে কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন এবং এর প্রতিক্রিয়ায় তারা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন এই শুল্ককে ‘অসামঞ্জস্যপূর্ণ’ বলে মন্তব্য করেছেন এবং এর ফলে কর্মসংস্থান হারানোরও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। চীন সরকারও ট্রাম্পের এই শুল্কনীতিকে বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থার জন্য ক্ষতিকর হিসেবে বর্ণনা করেছে।
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এর সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে এখনই সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলা কঠিন। তবে, বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থায় অস্থিরতা তৈরি হলে, তা বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। পোশাক, চামড়া, পাটসহ বিভিন্ন খাতে এর প্রভাব আসতে পারে। এছাড়া, বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম বাড়লে, তা বাংলাদেশের বাজারেও প্রভাব ফেলতে পারে।
বর্তমানে, এই শুল্কনীতি কিভাবে কার্যকর হবে এবং এর ফলস্বরূপ বিশ্ব অর্থনীতিতে কি পরিবর্তন আসবে, সেদিকেই সবার দৃষ্টি। বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকদের জন্য পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা এবং সম্ভাব্য ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।
তথ্যসূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস