মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘ-দূরত্বের দৌড় এখন যেন এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে, এবং এর অগ্রভাগে রয়েছেন গ্রান্ট ফিশার। এই দৌড়বিদ ফেব্রুয়ারী মাসেই মাত্র ছয় দিনের ব্যবধানে দুটি বিশ্ব রেকর্ড গড়ে ক্রীড়া বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন।
ফিশারের অসাধারণ এই সাফল্যের গল্প শুরু হয় নিউ ইয়র্কের একটি ইনডোর প্রতিযোগিতায়। সেখানে তিনি ৩,০০০ মিটার দৌড়ে ৭ মিনিট ২২.৯১ সেকেন্ড সময় নিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়েন। এর কয়েক দিন পরেই, ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে বোস্টনে অনুষ্ঠিত আরেকটি ইনডোর প্রতিযোগিতায় তিনি ৫,০০০ মিটার দৌড় ১৪ মিনিট ৪৪.০৯ সেকেন্ডে শেষ করে নিজের দ্বিতীয় বিশ্ব রেকর্ডটি গড়েন।
ফিশারের এই দুটি রেকর্ড গড়ার প্রক্রিয়া ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। নিউ ইয়র্কে তিনি স্বদেশী প্রতিদ্বন্দ্বী কোল হকারের কাছ থেকে কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছিলেন, যেখানে শেষ পর্যন্ত সামান্য ব্যবধানে জয়ী হন। অন্যদিকে, বোস্টনের দৌড়ে তিনি অনেকটা একাই দৌড়ান। সেখানে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকা সত্ত্বেও, তিনি নিজের সেরাটা উজাড় করে দেন।
এই সাফল্যের ফলে ফিশার এখন শুধু একজন দৌড়বিদ নন, বরং বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনের উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে পরিচিত হয়েছেন। গত বছর তিনি অলিম্পিকে ৫,০০০ ও ১০,০০০ মিটার দৌড়ে ব্রোঞ্জ পদক জিতেছিলেন। সম্প্রতি তিনি জ্যামাইকাতে অনুষ্ঠিতব্য ‘গ্র্যান্ড স্ল্যাম ট্র্যাক’ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে যাচ্ছেন, যা আমেরিকান কিংবদন্তি মাইকেল জনসনের তত্ত্বাবধানে শুরু হয়েছে। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের সেরা স্প্রিন্টার এবং দীর্ঘ-দূরত্বের দৌড়বিদরা অংশ নেবেন।
ফিশারের লক্ষ্য এখন প্রতিটি প্রতিযোগিতায় জয়ী হওয়া। তিনি বলেন, “আমি জানি আমি দ্রুত দৌড়াতে পারি, এখন দেখতে চাই আমি বিশ্বের সেরা দৌড়বিদদের হারাতে পারি কিনা।” এই প্রতিযোগিতায় তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারেন কেনিয়ার রোনাল্ড কোয়েমোই।
ফিশারের এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে কঠোর প্রশিক্ষণ এবং প্রশিক্ষকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। তিনি তাঁর পুরনো কোচ মাইক স্ক্যানেলের অধীনে প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করার পরেই সাফল্যের পথে এগিয়ে যান। উচ্চতায় প্রশিক্ষণ নেওয়ার কারণেও তাঁর দৌড়ের গতিতে উন্নতি হয়েছে।
ফিশারের এই উত্থান, আমেরিকার দীর্ঘ-দূরত্বের দৌড়ের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। তাঁর সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে, তরুণ প্রজন্মের দৌড়বিদরা এখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজেদের প্রমাণ করতে আগ্রহী হচ্ছেন। ফিশার মনে করেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দৌড় এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী।”
তথ্য সূত্র: সিএনএন