মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভেন্সের বাণিজ্যনীতি বিষয়ক অবস্থানে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। একসময় ডোনাল্ড ট্রাম্পের সংরক্ষণবাদী বাণিজ্যনীতির কড়া সমালোচক হিসেবে পরিচিত ভেন্স, বর্তমানে সেই ট্রাম্পের অর্থনৈতিক এজেন্ডার প্রধান সমর্থক।
সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসন নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়ার পর, ভাইস প্রেসিডেন্ট ভেন্স একে স্বাগত জানিয়েছেন। এই ঘটনা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিমালার সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
২০১৬ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে, জে ডি ভেন্স প্রায়ই বলতেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন খাতের কর্মসংস্থান হারানোর মূল কারণ হলো প্রযুক্তি এবং স্বয়ংক্রিয়তা, বিশ্বায়ন নয়। তিনি মনে করতেন, সংরক্ষণবাদী বাণিজ্যনীতি এক্ষেত্রে খুব সামান্যই প্রভাব ফেলবে।
এমনকি, ২০১৬ সালে ইন্ডিয়ানার একটি কারখানায় ট্রাম্পের শ্রমিকদের সঙ্গে চুক্তি করার ঘোষণার পরেও, ভেন্সের বক্তব্যে এর সমালোচনা শোনা যায়। তিনি তখন বলেছিলেন, বাণিজ্য সুরক্ষার চেয়ে শিক্ষা ও অটোমেশন এর দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত।
তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভেন্সের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হয়েছে। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের নীতিগুলো তিনি পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং এর ফলস্বরূপ তার মধ্যে এই পরিবর্তন আসে। যদিও তিনি একসময় ট্রাম্পের বাণিজ্যনীতির কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন, পরবর্তীতে তিনি এই নীতির প্রতি সমর্থন জানান।
এমনকি, ট্রাম্প প্রশাসনের এই নীতির সাফল্যের সম্ভাবনা নিয়েও তিনি দ্বিধা প্রকাশ করেছিলেন।
জে ডি ভেন্সের এই অবস্থান পরিবর্তনের কারণ হিসেবে অনেকে মনে করেন, তিনি ট্রাম্পের রাজনৈতিক দর্শনকে সমর্থন করেন। এছাড়া, তিনি এখন মনে করেন, বিশ্বায়নের কারণে কিছু সম্প্রদায়ের ক্ষতি হলেও, বাণিজ্যনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়।
ভেন্সের এই পরিবর্তন এবং ট্রাম্পের বাণিজ্যনীতির প্রতি তার সমর্থনের কারণে, এখন তিনি প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ মুখ। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতিতে আরও পরিবর্তন আসতে পারে, যা বিশ্ব অর্থনীতিতে, বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি বড় অংশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ওপর নির্ভরশীল, তাই যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতির যেকোনো পরিবর্তন আমাদের দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
জে ডি ভেন্সের এই অবস্থান পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ বিশ্ব অর্থনীতির গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন