শিরোনাম: কিশোর বয়সে কাজের অভিজ্ঞতা: যুক্তরাষ্ট্রের এক শিক্ষার্থীর চোখে এর গুরুত্ব
বর্তমান যুগে, পড়াশোনার পাশাপাশি অল্প বয়স থেকেই কাজ করার প্রবণতা অনেক দেশেই বাড়ছে। সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্রের একটি পত্রিকার কলামে সেখানকার এক শিক্ষার্থীর কাজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরা হয়েছে।
মেরী ফ্রান্সেস রাসকেল নামের ওই শিক্ষার্থী তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে কিশোর বয়সে কাজ করার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন। চলুন, জেনে নেওয়া যাক, তার অভিজ্ঞতা থেকে আমরা কী শিখতে পারি।
মেরী যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলিনার একটি হাই স্কুলের ছাত্রী। স্কুলের পাঠ্যক্রমের পাশাপাশি, তিনি একটি রেস্টুরেন্টে ওয়েটারের কাজ করতেন।
তার মতে, কিশোর বয়সে কাজ করা কেবল অর্থ উপার্জনের সুযোগ তৈরি করে না, বরং এটি জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দেয়।
মেরীর অভিজ্ঞতা থেকে জানা যায়, কাজ করার মাধ্যমে একজন কিশোর বা কিশোরী বিভিন্ন ধরনের মানুষের সঙ্গে মিশে তাদের জীবন সম্পর্কে ধারণা লাভ করে। বিভিন্ন বয়সের মানুষের সঙ্গে কাজ করার ফলে তাদের চিন্তা-ভাবনা, জীবনযাত্রা সম্পর্কে জানার সুযোগ হয়, যা স্কুলের গণ্ডির বাইরের জগৎ সম্পর্কে একটি ভিন্ন ধারণা তৈরি করে।
এই অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের সামাজিক দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে।
যুক্তরাষ্ট্রে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে কাজ করার প্রবণতা কিছুটা কমেছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দেশটির হাই স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যে এক-চতুর্থাংশের কম শিক্ষার্থী কাজ করেছে।
এর কারণ হিসেবে অনেকে মনে করেন, পড়াশোনার চাপ বৃদ্ধি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রতি আসক্তি অন্যতম। ভালো ফল করার জন্য শিক্ষার্থীদের উপর অতিরিক্ত চাপ থাকে, যার কারণে তারা কাজের সুযোগ থেকে পিছিয়ে আসে।
মেরীর মতে, কাজ করার ফলে স্কুলের একঘেয়েমি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এটি একটি ভিন্ন জগৎ তৈরি করে, যেখানে সবাই তাদের সামাজিক অবস্থান নির্বিশেষে একে অপরের সঙ্গে মিশে।
কাজ করার মাধ্যমে সময় ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বাড়ে, সেই সাথে বিভিন্ন ধরনের মানুষের সঙ্গে মিশে কাজ করার অভিজ্ঞতা তৈরি হয়।
তবে, বাংলাদেশে কিশোর বয়সে কাজের ধারণাটি এখনো সেভাবে জনপ্রিয়তা পায়নি। অনেক পরিবারে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার দিকেই বেশি মনোযোগ দিতে উৎসাহিত করা হয়।
কিন্তু উন্নত বিশ্বে ছাত্রজীবনে কাজের গুরুত্ব অনেক বেশি। কর্মজীবনে প্রবেশ করার আগে এই ধরনের অভিজ্ঞতা তরুণদের আত্মবিশ্বাসী করে তোলে এবং তাদের ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য প্রস্তুত করে।
মেরীর এই অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, কিশোর বয়সে কাজ করা শুধু অর্থ উপার্জনের একটি মাধ্যম নয়, বরং এটি জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। এটি শিক্ষার্থীদের আত্মনির্ভরশীল করে তোলে এবং তাদের সামাজিক দক্ষতা বাড়াতে সহায়ক হয়।
তথ্য সূত্র: সিএনএন-এ প্রকাশিত মেরী ফ্রান্সেস রাসকেলের নিবন্ধ অবলম্বনে।