কিংবদন্তি মার্কিন সঙ্গীতশিল্পী পল সাইমন দীর্ঘ বিরতির পর আবার ফিরে এসেছেন, এবারের গন্তব্য নিউ অরলিন্স। স্বাস্থ্যগত কারণে দীর্ঘ সাত বছর সঙ্গীত জগৎ থেকে দূরে থাকার পর, সম্প্রতি তিনি “এ কুইয়েট সেলিব্রেশন ট্যুর” -এর মাধ্যমে তাঁর প্রত্যাবর্তন করেছেন, যা সম্ভবত তাঁর শেষ সফরও হতে পারে।
নিউ অরলিন্সের সেঞ্জার থিয়েটারে অনুষ্ঠিত কনসার্টে পল সাইমন তাঁর সঙ্গীত জীবনের নানা দিক তুলে ধরেন। একদিকে ছিল তাঁর নতুন অ্যালবাম ‘সেভেন সাল্মস’-এর গভীর আধ্যাত্মিক গানগুলি, অন্যদিকে ছিল পুরনো দিনের জনপ্রিয় গানগুলির নতুন পরিবেশনা।
কনসার্টে তিনি তাঁর শ্রোতাদের শোনান ‘দ্য বক্সার’ গানটি। গানের মাঝে তিনি তাঁর স্বাস্থ্য বিষয়ক সমস্যার ইঙ্গিত দেন, যা তাঁর শিল্পী জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
কনসার্টে পল সাইমনের পরিবেশনার ধরন ছিল খুবই আকর্ষণীয়। শুরুতে তিনি ‘সেভেন সাল্মস’ অ্যালবামটি সম্পূর্ণভাবে পরিবেশন করেন, যেখানে তাঁর কণ্ঠ এবং গিটারের সুর ছিল প্রধান আকর্ষণ।
মাঝে ছিল তাঁর স্ত্রী এবং গীতিকার এডি ব্রিকেলের সঙ্গে দুটি দ্বৈত গান। এরপর বিরতির পর তিনি পরিচিত কিছু গান পরিবেশন করেন, যেগুলি তাঁর এবং সাইমন অ্যান্ড গার্ফুনকেলের গানের ভাণ্ডার থেকে নেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে ছিল ‘গ্র্যাসল্যান্ড’, ‘স্লিপ স্লাইডিং অ্যাওয়ে’ এবং ‘হোমওয়ার্ড বাউন্ড’-এর মতো জনপ্রিয় গান।
পুরোনো গানের পাশাপাশি, পল সাইমন তাঁর কম পরিচিত কিছু গানও পরিবেশন করেন। তিনি জানান, গানগুলো হয়তো অনেকের কাছে পরিচিত নয়, তবে তাঁর কাছে খুবই প্রিয়।
গানের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি কিছু মজাদার ঘটনাও শোনান। উদাহরণস্বরূপ, ‘সেন্ট জুডিস কমেট’ গানটি উৎসর্গ করেন ক্লফটন চেনিয়ারের ব্যান্ডের ড্রামার রবার্ট সেন্ট জুডির প্রতি।
এছাড়াও, ‘দ্য লেট গ্রেট জনি এস’-এর মতো গান পরিবেশন করে তিনি দর্শকদের মুগ্ধ করেন।
কনসার্টের শেষ ভাগে ছিল ‘মি অ্যান্ড জুলিও ডাউন বাই দ্য স্কুলইয়ার্ড’ এবং ‘দ্য সাউন্ড অফ সাইলেন্স’-এর মতো গানগুলি, যা দর্শকদের মধ্যে বিপুল সাড়া ফেলে।
টিকিটের উচ্চ মূল্য নিয়ে আলোচনা চললেও, কনসার্টটি ছিল দারুণ উপভোগ্য। বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা সঙ্গীতপ্রেমীরা পল সাইমনের এই প্রত্যাবর্তনকে স্বাগত জানিয়েছেন।
ক্যালিফোর্নিয়া থেকে আসা এক পিতা ও কন্যা, এনরিকে ও ইয়েদিথজা নুনেজ জানান, পল সাইমনের লাইভ কনসার্ট দেখার অভিজ্ঞতা তাঁদের জন্য ছিল স্বপ্নের মতো।
এই কনসার্টের মাধ্যমে পল সাইমন প্রমাণ করলেন, তাঁর কণ্ঠ আজও একইভাবে শক্তিশালী, যা সঙ্গীতপ্রেমীদের হৃদয়ে এক গভীর দাগ কাটে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান