মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ সুদানের পাসপোর্টধারীদের ভিসা বাতিল করেছে এবং নতুন করে ভিসা প্রদানও বন্ধ করে দিয়েছে। দেশটির নাগরিকদের ফেরত নিতে দক্ষিণ সুদানের অসহযোগিতার অভিযোগের জের ধরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি, দেশটির পররাষ্ট্র সচিব মার্কো রুবিও এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানান। ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ফেরার পর এই প্রথম কোনো দেশের সকল পাসপোর্টধারীর ভিসা বাতিলের মতো পদক্ষেপ নেওয়া হলো।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দক্ষিণ সুদানের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে দেশটির সরকারের অসহযোগিতার কারণে ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রুবিও জুবার (দক্ষিণ সুদানের রাজধানী) সরকারের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সুযোগ নেওয়ার অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, অন্য কোনো দেশ যখন তাদের নাগরিকদের ফেরত পাঠাতে চায়, তখন প্রতিটি দেশেরই তা গ্রহণ করার দায়িত্ব রয়েছে।
দক্ষিণ সুদান বিশ্বের নবীনতম এবং দরিদ্রতম দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। বর্তমানে দেশটির রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
কিছু পর্যবেক্ষক আশঙ্কা করছেন, ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সময়ে সংঘটিত হওয়া গৃহযুদ্ধের পুনরাবৃত্তি হতে পারে, যেখানে প্রায় ৪ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতিতে পরিবর্তনের একটি প্রেক্ষাপটও রয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন এর আগে বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের ‘অস্থায়ী সুরক্ষা মর্যাদা’ (Temporary Protected Status – TPS) বাতিল করতে শুরু করে।
এই কর্মসূচির আওতায় থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ছিলেন ভেনেজুয়েলার নাগরিক। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে এবং এখনো এর নিষ্পত্তি হয়নি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে টিপিএস প্রোগ্রামের অধীনে থাকা দক্ষিণ সুদানের নাগরিকের সংখ্যা ১৩৩ জন। এছাড়া, আরও ১৪০ জন আবেদন করার যোগ্য ছিলেন।
তথ্যানুসারে, মার্চ ২০২৪ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১২ লাখ মানুষ টিপিএস সুবিধা পাওয়ার যোগ্য ছিলেন বা এই সুবিধা ভোগ করছিলেন। এর মধ্যে ভেনেজুয়েলার নাগরিকের সংখ্যা ছিল সবচেয়ে বেশি।
বর্তমানে, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে আসা মানুষেরা ইউরোপের ঝুঁকিপূর্ণ পথের পরিবর্তে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত দিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করছেন, যা ভিসা বাতিলের এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান