শিরোনাম: বায়োপিক নিয়ে সমালোচনার ঝড়: শিল্প নাকি দর্শক-স্বার্থের লড়াই?
চলচ্চিত্র জগতে বায়োপিক বা জীবন-ভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাণের হিড়িক নতুন নয়। কোনো কিংবদন্তী ব্যক্তির জীবনকে পর্দায় ফুটিয়ে তোলার এই আগ্রহ সবসময়ই দর্শকদের মধ্যে কৌতূহল জাগায়। সম্প্রতি, কয়েকটি বহুল প্রতীক্ষিত বায়োপিক এবং জনপ্রিয় ক্লাসিক উপন্যাসের চলচ্চিত্র রূপান্তর নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে, যা মূলত ছবি মুক্তির আগেই সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
পশ্চিমা গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, নির্মাতাদের কাজ শুরু হওয়ার আগেই ছবিগুলো নিয়ে দর্শকদের মধ্যে তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন আর আপত্তি।
বিখ্যাত ব্যান্ড ‘দ্য বিটলস’-এর বায়োপিকে অভিনয়শিল্পী নির্বাচন নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক শুরু হয়ে গেছে। ছবিতে অভিনয় করছেন এমন অনেক শিল্পী লিভারপুলের স্থানীয় নন, যা অনেকের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।
সমালোচকদের মতে, এতে করে বিটলসের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের প্রতি যথাযথ সম্মান জানানো হয়নি। দর্শক-মনে প্রশ্ন জেগেছে, এই শিল্পীরা কি তাদের চরিত্রে সুবিচার করতে পারবেন?
অন্যদিকে, ডিজনির আসন্ন ছবি ‘স্নো হোয়াইট’-এর কাস্টিং নিয়েও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ছবির প্রধান চরিত্রে শ্বেতাঙ্গ অভিনেত্রী নির্বাচন করা হয়েছে, যা অনেক দর্শকের কাছে হতাশাজনক মনে হয়েছে।
এছাড়াও, বামন চরিত্রে অভিনেতাদের পরিবর্তে কম্পিউটার গ্রাফিক্স ব্যবহারের সিদ্ধান্তও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
আরেকটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হলো এমিলি ব্রন্টির বিখ্যাত উপন্যাস ‘উদার হিল’-এর চলচ্চিত্র রূপান্তর। ছবিতে ক্যাথরিন এরনশ চরিত্রে মার্গট রবিকে সাদা পোশাকে দেখা যাওয়ায় অনেকে এর ঐতিহাসিক যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
এছাড়াও, হিথক্লিফ চরিত্রে শ্বেতাঙ্গ অভিনেতা নির্বাচন নিয়েও বিতর্ক হয়েছে। অনেকে মনে করেন, হিথক্লিফের চরিত্রে একজন কৃষ্ণাঙ্গ অভিনেতাকে নির্বাচন করা হলে, তা চরিত্রটির ‘বৈদেশিকতা’ আরও ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলত।
আসলে, বর্তমান ডিজিটাল যুগে দর্শক-শ্রোতাদের মধ্যে ছবি বা গল্পের গভীরে যাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি মুক্তির আগেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়ে যায়।
অনেক সময়, নির্মাতাদের কাজ শুরু হওয়ার আগেই ছবি সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়ে যায়, যা চলচ্চিত্রের সৃজনশীলতাকে বাধাগ্রস্ত করে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ছবি মুক্তির আগে সমালোচনার এই প্রবণতা শিল্পীদের কাজকে কঠিন করে তোলে। সবার আগে, দর্শকদের ধৈর্য ধরতে হবে এবং ছবিগুলো মুক্তি পাওয়ার পর তাদের মূল্যায়ন করা উচিত।
চলচ্চিত্র নির্মাতাদের প্রতি সম্মান রেখে, তাদের কাজ শেষ করার সুযোগ দেওয়া উচিত। কারণ, অনেক সময় মুক্তির পরই দর্শকরা বুঝতে পারেন, নির্মাতারা আসলে কী বোঝাতে চেয়েছেন।
তথ্য সূত্র: পশ্চিমা গণমাধ্যম