যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট নিয়ে রিপাবলিকানদের মধ্যে বিভেদ, ট্রাম্পের পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ার শঙ্কা।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত বাজেট পরিকল্পনা নিয়ে রিপাবলিকানদের মধ্যেই দেখা দিয়েছে মতবিরোধ। দলের অনেক সদস্যই এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করছেন, যার ফলে প্রেসিডেন্টের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। খবরটি প্রকাশ করেছে সিএনএন।
যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভা কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস এবং উচ্চকক্ষ সিনেটের মধ্যে বাজেট নিয়ে আলোচনা চলছে। সিনেটের প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী, কর কমানো হলেও সরকারি খরচ সেভাবে কমানো হচ্ছে না। বরং এতে জাতীয় ঋণের পরিমাণ আরও ৫ ট্রিলিয়ন ডলার বাড়বে। এই পরিস্থিতিতে দলের অনেক সদস্যের মধ্যেই অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
রিপাবলিকান দলের প্রভাবশালী সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী রিয়ান জিংক সহ বেশ কয়েকজন এই বাজেট নিয়ে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। তাদের মতে, সামান্য কিছু খরচ কমানোর প্রস্তাবের বিনিময়ে বড় অংকের কর ছাড় দেওয়া হলে তা হিসাবের সঙ্গে মিলবে না। জিংকের মতো আরও অনেক রিপাবলিকান সদস্য মনে করেন, এই পরিকল্পনা দেশের অর্থনীতির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট সংক্রান্ত যেকোনো সিদ্ধান্ত বিশ্ব অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। তাই, এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে রিপাবলিকানদের এই বিভেদ আন্তর্জাতিক বাজারেও অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।
কংগ্রেসের নিম্নকক্ষের স্পিকার মাইক জনসনসহ দলের শীর্ষ নেতারা এই বিরোধ মিটিয়ে দ্রুত একটি সমাধানে আসার চেষ্টা করছেন। তবে, দলের কট্টরপন্থী হিসেবে পরিচিত কিছু সদস্য, বিশেষ করে ‘হাউস ফ্রিডম ককাস’-এর সদস্যরা এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করছেন। তারা মনে করেন, জাতীয় ঋণের বোঝা কমাতে হলে সরকারি খরচে আরও বেশি কাটছাঁট করতে হবে।
রিপাবলিকান দলের সদস্য ও হাউস বাজেট কমিটির ভাইস চেয়ার লয়েড স্মাকারের মতে, তিনি প্রেসিডেন্টের নীতিকে সমর্থন করেন, তবে এমন একটি বাজেট চান যা দেশের আর্থিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করবে। তিনি বলেন, “আমি এমন কিছু দেখতে চাই যা কার্যকর হবে।
হাউস ফ্রিডম ককাসের সদস্য ও অ্যারিজোনার রিপাবলিকান প্রতিনিধি এলি ক্রেইন এই বাজেটকে ‘হাস্যকর’ বলে মন্তব্য করেছেন এবং এর তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, যদি সরকার সত্যিই খরচ কমাতে রাজি না হয়, তাহলে তিনি এই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেবেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রিপাবলিকানদের এই অভ্যন্তরীণ বিরোধ ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, বাজেট পাস না হলে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ অনেক কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে। এখন দেখার বিষয়, দলের নেতারা কিভাবে এই সংকট মোকাবেলা করেন এবং শেষ পর্যন্ত বাজেট পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তারা সফল হন কিনা।
তথ্য সূত্র: সিএনএন