মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ সুদানের পাসপোর্টধারীদের সকল ভিসা বাতিল করেছে। দেশটির সরকার তার নাগরিকদের ফেরত নিতে রাজি না হওয়ায় ওয়াশিংটন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে।
শনিবার এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, “প্রত্যেক দেশকে অবশ্যই সময়মতো তাদের নাগরিকদের ফেরত নিতে হবে, যখন অন্য কোনো দেশ, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র তাদের ফেরত পাঠাতে চায়।
দক্ষিণ সুদানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই নীতিটি সম্পূর্ণরূপে সম্মান জানাতে ব্যর্থ হয়েছে।”
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আরও জানিয়েছে, দক্ষিণ সুদানের পাসপোর্টধারীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বাধা দিতে ভিসা ইস্যু করাও বন্ধ করা হবে।
রুবিও আরও উল্লেখ করেন, দক্ষিণ সুদান যখন সম্পূর্ণ সহযোগিতা করবে, তখন এই পদক্ষেপগুলো পর্যালোচনা করা হবে।
জানা গেছে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিবাসনবিরোধী নীতির ওপর ভিত্তি করে হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর এই ধরনের ব্যবস্থা প্রথম নেওয়া হলো।
এর আগে, দক্ষিণ সুদানের নাগরিকদের ‘অস্থায়ী সুরক্ষা মর্যাদা’ (Temporary Protected Status – TPS) দিয়েছিল তৎকালীন জো বাইডেন প্রশাসন।
এই টিপিএস-এর মেয়াদ আগামী ৩ মে শেষ হওয়ার কথা ছিল।
টিপিএস-এর মাধ্যমে বিদেশি নাগরিকদের যুদ্ধ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্যান্য ‘অসাধারণ’ পরিস্থিতিতে দেশে ফিরতে না পারার কারণে তাদের বিতাড়িত হওয়া থেকে রক্ষা করে যুক্তরাষ্ট্র।
অন্যদিকে, দক্ষিণ সুদানে সাম্প্রতিক সময়ে সরকারি সেনা ও সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সহিংসতা বেড়েছে। এতে দেশটিতে পুনরায় গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে দক্ষিণ সুদানকে আরেকটি গৃহযুদ্ধের ‘গর্তে’ পতিত হওয়া থেকে রক্ষা করা যায়।
তিনি সতর্ক করে বলেন, বিশ্বের নবীনতম এবং দরিদ্রতম দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম দক্ষিণ সুদান বর্তমানে ‘নিরাপত্তা জরুরি অবস্থার’ সম্মুখীন হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ সুদানে চলা গৃহযুদ্ধে প্রায় ৪ লাখ মানুষ নিহত হয়েছিল।
বর্তমান প্রেসিডেন্ট সালভা কির এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট রিয়েক মাচারের মধ্যে চলমান উত্তেজনার ফলস্বরূপ, গত মাসে মাচারকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মাচারের দল জানায়, এই গ্রেপ্তারের ফলে ২০১৮ সালের ক্ষমতা ভাগাভাগির শান্তি চুক্তি ভেঙে গেছে, যা বছরের পর বছর ধরে চলা লড়াইয়ের অবসান ঘটিয়েছিল।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানী জুবার বাইরে কির ও মাচারের অনুগত বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা