যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য শুল্কের সিদ্ধান্তে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ, বাংলাদেশের জন্য কী প্রভাব?
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন বাণিজ্য শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের জেরে বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন দেশ এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেছে, এবং বাণিজ্য যুদ্ধ (trade war) শুরুর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমার এই পদক্ষেপকে ‘নতুন বিশ্ব’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যেখানে নিয়ম-কানুনের বদলে চুক্তি ও জোটের প্রাধান্য থাকবে।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বজুড়ে পণ্য আমদানির ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। অনেক দেশেই এই শুল্ক আরও বেশি হতে পারে।
ব্রিটেনের ক্ষেত্রে শুল্কের হার তুলনামূলকভাবে কম হলেও, এর প্রভাব নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। যুক্তরাজ্যের ট্রেজারি বিভাগের প্রধান সচিব ড্যারেন জোন্স বিবিসিকে জানান, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে কার্যত ‘গত কয়েক দশকের বিশ্বায়ন’-এর অবসান ঘটেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের ফলে চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানের মতো দেশগুলোও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। চীন আগামী বৃহস্পতিবার থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করতে যাচ্ছে।
এর প্রতিক্রিয়ায় জিম্বাবুয়ে তাদের আমদানি শুল্ক স্থগিত করেছে, এবং ইন্দোনেশিয়া জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ৩২ শতাংশ শুল্ক আরোপের পাল্টা পদক্ষেপ নেবে না। ইন্দোনেশিয়ার মতে, তারা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক এবং বিনিয়োগের পরিবেশ স্থিতিশীল রাখতে চাইছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই শুল্ক আরোপ ১৯৩০ সালের স্মুট-হাওলি শুল্ক আইনের (Smoot-Hawley Tariff Act) পর সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ। সেই আইন বিশ্ব বাণিজ্য যুদ্ধ ডেকে এনেছিল এবং এর ফলস্বরূপ ১৯৩০-এর দশকে মহামন্দা (Great Depression) দেখা দেয়।
এই পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে আলোচনা করা দরকার। বিশ্ব অর্থনীতির এই পরিবর্তনে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য, বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পের (garment industry) উপর কেমন প্রভাব পড়বে, তা এখন গুরুত্বপূর্ণ।
আমদানি পণ্যের দাম বাড়লে, তা দেশের বাজারেও প্রভাব ফেলবে। বাণিজ্য শুল্কের এই নতুন পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকদের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, যাতে দেশের অর্থনীতিকে সুরক্ষিত রাখা যায়।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা