ব্রিটিশ সংসদ সদস্যকে হংকংয়ে প্রবেশ করতে না দেওয়ার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র সচিব ডেভিড ল্যামি এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং বিষয়টি দ্রুত চীন কর্তৃপক্ষের কাছে উত্থাপনের কথা জানিয়েছেন।
জানা গেছে, ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য ওয়েরা হবহাউস ব্যক্তিগত সফরে হংকংয়ে তার ছেলে ও নাতিকে দেখতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার তাকে হংকং বিমানবন্দরে নামার পর সেখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। হবহাউস বলেছেন, ১৯৯৭ সালে হংকং চীনের কাছে হস্তান্তরের পর এই প্রথম কোনো ব্রিটিশ এমপিকে এভাবে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হলো। তিনি এই সিদ্ধান্তকে ‘নিষ্ঠুর’ এবং ‘সকল সংসদ সদস্যের প্রতি অপমান’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
ওয়েরা হবহাউস ইন্টার-পার্লামেন্টারি অ্যালায়েন্স অন চায়নার (আইপ্যাক) সদস্য। এই সংগঠনটি চীনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ওপর নজর রাখে। তিনি জানিয়েছেন, তাকে কেন প্রবেশ করতে দেওয়া হলো না, সে বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। পররাষ্ট্র সচিব ল্যামি বলেছেন, একজন এমপি ব্যক্তিগত সফরে গিয়ে এভাবে প্রবেশের অনুমতি না পাওয়াটা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। তিনি দ্রুত হংকং এবং বেইজিং কর্তৃপক্ষের কাছে এর কারণ জানতে চাইবেন।
ল্যামি আরও বলেন, কোনো সংসদ সদস্যকে কেবল তার মত প্রকাশের কারণে প্রবেশে বাধা দেওয়া হলে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না। এমন পদক্ষেপ হংকংয়ের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তিকে আরও দুর্বল করবে।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, হবহাউসের পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছিল এবং তাকে তার কাজ ও সফরের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর তার জিনিসপত্র তল্লাশি করে বোর্ডিং গেটে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, যখন তাকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়, তখন তিনি কেঁদে ফেলেছিলেন এবং এর কারণ জানতে চান।
হবহাউসের এই ঘটনায় তার সহকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। লিবারেল ডেমোক্র্যাট দলের নেতা স্যার এড ডেভি এটিকে ‘হৃদয়হীন’ এবং ‘পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য’ বলে মন্তব্য করেছেন। আইপ্যাক এক বিবৃতিতে বলেছে, হবহাউসকে প্রবেশ করতে না দেওয়ার কারণ হতে পারে চীনের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে তার সমালোচনা এবং এই নেটওয়ার্কের সঙ্গে তার যুক্ত থাকা। তারা এটিকে ‘গণতান্ত্রিক নীতি ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতার প্রতি চরম অবমাননা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
প্রসঙ্গত, এর আগেও চীন বেশ কয়েকজন ব্রিটিশ এমপিকে তাদের দেশে প্রবেশ করতে দেয়নি। তাদের মধ্যে আইপ্যাক সদস্য স্যার ইয়ান ডানকান স্মিথ এবং নুসরত ঘানিও রয়েছেন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান