ফ্রান্সের চরম ডানপন্থী নেত্রী মেরিন লে পেনকে অর্থ আত্মসাতের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এর ফলে ২০২৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করাসহ তার নির্বাচনে অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এই রায়ের পর ফ্রান্সের রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। লে পেন এই রায়কে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেছেন এবং এর বিরুদ্ধে আপিল করার ঘোষণা দিয়েছেন।
প্যারিসের ভবান স্কয়ারে তার দল ন্যাশনাল র্যালির সমর্থক ও সদস্যদের এক সমাবেশে লে পেন বলেন, তিনি কোনো অবস্থাতেই হাল ছাড়বেন না। তিনি এই রায়কে তার দলের বিরুদ্ধে ‘witch-hunt’ বা ‘গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের চেষ্টা’ হিসেবেও উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, এই শব্দটি ব্যবহার করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও।
লে পেনের এই রায়ের প্রতিবাদে বামপন্থী দল ও মধ্যপন্থীরা প্যারিসের রিপাবলিক স্কয়ারে পাল্টা বিক্ষোভ করেছে। তারা এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার দাবি জানায় এবং ন্যাশনাল র্যালির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানায়।
মেরিন লে পেনের দলের শীর্ষ নেতা জর্ডান বারদেলা সমাবেশে বলেন, আদালত এই রায় দিয়ে আসলে লে পেনকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে চাইছে। তিনি আরও বলেন, তারা আদালতের সব বিচারককে অসম্মান করতে চান না, তবে লে পেনের এই সাজা গণতন্ত্রের ওপর সরাসরি আঘাত এবং ফরাসি জনগণের দেশপ্রেমের প্রতি চরম অবমাননা।
এই রায় ফ্রান্সের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক ধরনের ধাক্কা দিয়েছে। কারণ, এর মাধ্যমে ২০২৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লে পেনের জয়ের স্বপ্ন ভেঙে যেতে পারে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, লেপেনের প্রার্থিতা বহাল থাকবে কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
প্যারিসের আপিল আদালত জানিয়েছে, আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে তারা এই আপিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
এদিকে, প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর দল ‘রেনেসাঁ’-এর এক বৈঠকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল আত্তাল চরম ডানপন্থীদের বিচার বিভাগ ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের ওপর আঘাত হানার জন্য অভিযুক্ত করেন। তিনি বলেন, সরকার কোনোভাবেই আদালতের রায়কে বাতিল করবে না।
এই সময় সেখানে প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বেইরু এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী এদুয়ার ফিলিপও উপস্থিত ছিলেন।
লে পেনের সমর্থকেরা এই রায়কে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করছেন। তবে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ ফরাসি বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে সমর্থন করেছেন।
মেরিন লে পেন তার দলকে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত করতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন। তিনি তার বাবার প্রতিষ্ঠিত দলের অতীত বিতর্কিত বিষয়গুলো থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছেন।
সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে, নির্বাচনে তিনি ৩৬ শতাংশ ভোট পেতে পারেন।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা