যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ বাস্কেটবলের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র জেনো অউরিমা। ইউনিভার্সিটি অফ কানেকটিকাট (UConn) -এর নারী বাস্কেটবল দলের এই কোচের মুকুটে যুক্ত হলো আরও একটি পালক, তাঁর কোচিং জীবনে ১২তম এনসিএএ (NCAA – National Collegiate Athletic Association) চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা। বাস্কেটবলের এই কিংবদন্তী শুধু একজন কোচই নন, তিনি তরুণ খেলোয়াড়দের জন্য এক অনুপ্রেরণার উৎস, সাফল্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
৪১ বছর আগে ১৯৮৫ সালে কানেকটিকাট বিশ্ববিদ্যালয়ে (University of Connecticut) যোগ দেন অউরিমা। সেই থেকে তিনি দলটিকে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দিয়েছেন। তাঁর অধীনে, ইউকন নারী বাস্কেটবল দল একাধিকবার জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এবং এই সাফল্যের ধারাবাহিকতা এখনো বজায় রয়েছে।
বাস্কেটবল বিশ্বে অউরিমা এতটাই প্রভাবশালী যে, খেলাটির সঙ্গে পরিচিত নন এমন মানুষের কাছেও তিনি সুপরিচিত।
অউরিমা শুধু একজন সফল কোচ নন, তিনি খেলোয়াড়দের অভিভাবকও। তাঁর তত্ত্বাবধানে উঠে আসা খেলোয়াড়দের মধ্যে অন্যতম হলেন মায়া মুর, ডায়ানা টরসি, সু বার্ড এবং ব্রেয়ানা স্টুয়ার্টের মতো তারকারা। এই তারকারা সবাই অউরিমাকে তাঁদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষক এবং পরামর্শদাতা হিসেবে শ্রদ্ধা করেন।
এই সাফল্যের রহস্য কী? খেলোয়াড়দের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের গভীরতা, কঠোর পরিশ্রমের মানসিকতা এবং খেলার প্রতি সীমাহীন ভালোবাসা—এগুলোই তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছে। সম্প্রতি, তাঁর দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় পেইজ বুকেস-এর বিদায় অনুষ্ঠানে আবেগঘন দৃশ্যের অবতারণা হয়।
বুকেস বলেন, “কোচ আমার জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তিনি আমাকে মানুষ হিসেবে এবং বাস্কেটবল খেলোয়াড় হিসেবে গড়ে তুলেছেন।
এই মুহূর্তে ৭১ বছর বয়সী অউরিমা এখনো খেলাটির সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। তাঁরুণ্যের এই উচ্ছ্বাস দেখে অনেকেই বিস্মিত হন। সম্প্রতি, বোস্টন সেল্টিক্সের কোচ জো মাজুলাও অউরিমাকে তাঁর গুরু হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, অউরিমা শুধু একজন কোচ নন, তিনি খেলা পরিচালনা এবং খেলোয়াড়দের তৈরি করার ক্ষেত্রেও অসাধারণ দক্ষতা রাখেন। তাঁর এই সক্ষমতাকে তিনি ম্যানচেস্টার সিটির কোচ পেপ গার্দিওলার সঙ্গে তুলনা করেছেন।
জেনো অউরিমা-র এই সাফল্য ক্রীড়া বিশ্বে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। তাঁর কোচিং কৌশল, খেলোয়াড়দের প্রতি তাঁর নিবেদিত প্রাণ, এবং খেলার প্রতি ভালোবাসাই তাঁকে কিংবদন্তীতে পরিণত করেছে। তাঁর এই যাত্রা তরুণ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস