বিশ্বের সেরা কফি শপের স্বীকৃতি পেলো সিডনির একটি ক্যাফে।
কফি প্রেমীদের জন্য সুখবর! সম্প্রতি মাদ্রিদে অনুষ্ঠিত ‘ওয়ার্ল্ডস ১০০ বেস্ট কফি শপস’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে বিশ্বের সেরা কফি শপের খেতাব জিতেছে সিডনির ‘টোবি’স এস্টেট কফি রোস্টার্স’। সাধারণত, অস্ট্রেলিয়ার এই শহরটি তার প্রাণবন্ত কফি সংস্কৃতির জন্য পরিচিত, এবং এই সম্মান তাদের মুকুটে নতুন একটি পালক যোগ করলো।
সিডনির আর্টস-বান্ধব চিপেনডেল এলাকার এই ক্যাফেটি বাইরে থেকে দেখতে সাদাসিধে হলেও, এর ভেতরের পরিবেশ সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখানে, ক্যাফের কর্মীরা গ্রাহকদের সামনেই কফি তৈরি করেন, অনেকটা অ্যাপল স্টোরের ‘জিনিয়াস বার’-এর মতো। ক্যাফের বিশাল কাঁচের দেয়ালের পেছনে, কফি তৈরির কারিগরদের ব্যস্ততা সবসময় চোখে পরে। তাদের নিপুণ হাতে তৈরি হওয়া কফি বিনগুলো যেন এক ভিন্ন জগৎ তৈরি করে। ক্যাফের পরিবেশ এতটাই আকর্ষণীয় যে, এটিকে অনেকটা ‘উইলি ওয়াঙ্কা’র কফি ফ্যাক্টরির সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে—আনন্দ, উদ্দীপনা, উদ্ভাবন এবং অবশ্যই কফির মাদকতা সেখানে সবসময় বিদ্যমান।
এখানে পরিবেশিত কফিও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। টোবি’স এস্টেট সারা বিশ্ব থেকে বিশেষ এবং পরীক্ষামূলক কফি বিন সংগ্রহ করে, যা মাসিক মেনুতে যোগ করা হয়। কফি প্রেমীদের জন্য, মেনুর এই পরিবর্তন যেন এক নতুন চমক নিয়ে আসে। উদাহরণস্বরূপ, একবার পানামার আলটিয়েরি কফি পরিবেশন করা হয়েছিল, যা ছিল অত্যন্ত সুস্বাদু এবং এর স্বাদ ছিল অনেকটা ক্রাফট বিয়ারের মতো।
ক্যাফের নিয়মিত গ্রাহক, শিল্পী ও স্টুডিও মালিক মেলিসা তান-লু জানান, “আমি আট বছর ধরে এখানে আসছি, কিন্তু এমন ভিড় আগে কখনো দেখিনি। সিডনির মানুষজন কফি নিয়ে বেশ সচেতন, এবং এখন তারা সবাই বুঝতে পারছে এই জায়গার কফি কতটা ভালো। ক্যাফেটি এই পুরস্কার জেতায় আমি গর্বিত, তবে এখন আমাদের সবার জন্য লাইনে দাঁড়ানোটা বেশ কষ্টের।”
টোবি’স এস্টেটের জেনারেল ম্যানেজার জোডি লেসলি বলেন, “এটা শুধু আমাদের বা সিডনির জয় নয়, বরং পুরো অস্ট্রেলিয়ার কফি সংস্কৃতির জন্য গর্বের বিষয়। আমরা সবসময় সেরা পণ্য পরিবেশন করতে চাই, এবং সে কারণেই সারা বিশ্ব থেকে নতুন ও আকর্ষণীয় কফি বিন সংগ্রহ করি।”
জানা যায়, টোবি’স এস্টেট-এর কর্মীরা এল সালভador, গুয়াতেমালা, কেনিয়া এবং ব্রাজিলের মতো দেশগুলো থেকে কফি বিন সংগ্রহ করে। তারা নিশ্চিত করে যে প্রতিটি কফি বিন যেন ‘স্পেশালিটি কফি অ্যাসোসিয়েশন’ (SCA) স্কেলে অন্তত ৮০ এর বেশি নম্বর পায়। এরপর, তারা সেই কফি পরিবেশনের সেরা উপায় খুঁজে বের করে।
এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে টোবি নামের এক আইনজীবীর গল্প, যিনি প্রায় ৩০ বছর আগে তার মায়ের গ্যারেজে কফি বিন ভাজা শুরু করেছিলেন। বর্তমানে, টোবি’স এস্টেটের বেশ কয়েকটি শাখা রয়েছে, তবে এই পুরস্কার জিতেছে তাদের ফ্ল্যাগশিপ শাখাটি। সম্প্রতি, তারা ম্যানহাটনেও একটি শাখা খোলার পরিকল্পনা করছে।
তথ্যসূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লেজার