প্রিন্স হ্যারির নিরাপত্তা বিষয়ক মামলা: যুক্তরাজ্যে নিরাপত্তা বহাল রাখতে আপিল।
যুক্তরাজ্যের রাজ পরিবারের সদস্য প্রিন্স হ্যারি তাঁর নিরাপত্তা বিষয়ক সরকারি সহায়তা পুনর্বহালের জন্য আপিল করেছেন। ২০১৯ সালে রাজ পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থেকে সরে এসে তিনি যখন স্ত্রী মেগান মার্কেলকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস শুরু করেন, তখন থেকে তার সরকারি নিরাপত্তা সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর থেকেই তিনি যুক্তরাজ্যে নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন।
হ্যারি, যিনি ডিউক অফ সাসেক্স উপাধি ধারণ করেন, তাঁর আইনজীবীরা লন্ডনের আপিল আদালতে এই মামলার শুনানিতে অংশ নিচ্ছেন। এর আগে, একটি নিম্ন আদালত ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে সরকারের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে রায় দেয়। আদালত জানিয়েছিল, প্রয়োজন অনুযায়ী হ্যারির জন্য নিরাপত্তা প্রদানের ব্যবস্থা ‘বেআইনি’, ‘অযৌক্তিক’ বা ‘অন্যায়’ নয়।
প্রিন্স হ্যারির মূল অভিযোগ হলো, তিনি এবং তাঁর পরিবার যখন যুক্তরাজ্যে যান, তখন তাঁদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে থাকে। কারণ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁর এবং তাঁর স্ত্রী ডাচেস অফ সাসেক্স মেগানকে নিয়ে বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য করা হয়। এছাড়া, সংবাদ মাধ্যমগুলোও তাঁদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে ক্রমাগত কৌতূহল প্রকাশ করে।
হ্যারি, যিনি বর্তমান রাজা তৃতীয় চার্লসের ছোট ছেলে, রাজ পরিবারের প্রথা ভেঙে সরকারের বিরুদ্ধে এবং সংবাদপত্রের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে নেমেছেন। এর আগে, তিনি যুক্তরাজ্যে ব্যক্তিগত খরচে পুলিশি নিরাপত্তা চেয়েও ব্যর্থ হয়েছিলেন। আদালত রায় দেয় যে, সরকারি কর্মকর্তাদের ‘ধনী ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত দেহরক্ষী’ হিসেবে ব্যবহার করা উচিত নয়।
তবে, হ্যারি সংবাদ মাধ্যমের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলায় জয়লাভ করেছেন। ডেইলি মিরর পত্রিকার বিরুদ্ধে ফোন হ্যাকিংয়ের একটি মামলায় তাঁর জয় হয়, যেখানে আদালত পত্রিকাটির বিরুদ্ধে ‘ব্যাপক ও নিয়মিত’ ফোন হ্যাকিংয়ের প্রমাণ পান। এছাড়া, ডেইলি মেইলের বিরুদ্ধে দায়ের করা একটি মানহানির মামলা তিনি প্রত্যাহার করে নেন।
২০২৩ সালে, রুপার্ট মার্ডকের মালিকানাধীন ইউকে ট্যাবলয়েডগুলি তাঁর ব্যক্তিগত জীবনে হস্তক্ষেপ করার জন্য ক্ষমা চেয়েছিল এবং ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হয়েছিল। বর্তমানে, তিনি মেইলের প্রকাশকদের বিরুদ্ধে অনুরূপ একটি মামলা পরিচালনা করছেন।
প্রিন্স হ্যারির এই আপিলের রায় এখন দেখার বিষয়। এই মামলার ফলাফলের ওপর নির্ভর করছে, ভবিষ্যতে তিনি যুক্তরাজ্যে কতটা নিরাপত্তা পাবেন।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস