বিবাহ বিচ্ছেদের পর আর্থিক ক্ষতির শিকার: যুক্তরাজ্যের এক নারীর অভিজ্ঞতা
আজকের দিনে, বিবাহ বিচ্ছেদ একটি জটিল প্রক্রিয়া, এবং এর সঙ্গে অনেক সময় আর্থিক বিষয়গুলো জড়িয়ে থাকে।
বিশেষ করে, যদি দাম্পত্য জীবনে কোনো সম্পত্তি বা ঋণ থাকে, তবে বিচ্ছেদের পর আর্থিক দায়-দায়িত্ব নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। সম্প্রতি, যুক্তরাজ্যের ডরসেটের বাসিন্দা জিএস-এর (ছদ্মনাম) একটি ঘটনার কথা জানা গেছে, যা আমাদের সমাজে বিবাহ বিচ্ছেদের পর আর্থিক সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা আরও একবার মনে করিয়ে দেয়।
জিএস-এর বিবাহ বিচ্ছেদ হয় এবং পারিবারিক আদালত তাদের যৌথ মালিকানাধীন বাড়িটি বিক্রির নির্দেশ দেয়।
যতক্ষণ পর্যন্ত বাড়িটি বিক্রি না হয়, আদালত নির্দেশ দেয় যে প্রাক্তন স্বামী সেখানে বসবাস করবেন এবং বন্ধকী ঋণের কিস্তি পরিশোধ করবেন। কিন্তু, জিএস আদালতকে সতর্ক করেছিলেন যে তার প্রাক্তন স্বামী এর আগেও কিস্তি পরিশোধে গড়িমসি করেছেন।
দুর্ভাগ্যবশত, বাড়িটি বিক্রি করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায় এবং এরই মধ্যে বন্ধকী ঋণের পাঁচ মাসের কিস্তি বকেয়া পড়ে। ব্যাংক এখন বাড়িটি পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছে।
এর ফলস্বরূপ, জিএস-এর ক্রেডিট স্কোর মারাত্মকভাবে কমে গেছে এবং বাড়িটি হাতছাড়া হলে ভবিষ্যতে তার জন্য নতুন করে ঋণ পাওয়া কঠিন হবে।
জিএস-এর আইনজীবীরা জানিয়েছেন যে ক্রেডিট স্কোরের এই ক্ষতির জন্য তিনি পারিবারিক আদালতে পুনরায় যেতে পারবেন না, কারণ আদালতের এখতিয়ারের বাইরে এটি।
কারণ, আদালতই প্রথমে এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছিল।
এই পরিস্থিতিতে, জিএস-এর আইনজীবীরা তাকে পরামর্শ দিয়েছেন যে তিনি যেন তার প্রাক্তন স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতের আদেশ অমান্য করার অভিযোগ করেন। সেক্ষেত্রে আদালত তার প্রাক্তন স্বামীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে অথবা মূল সিদ্ধান্ত সংশোধন করতে পারে।
এছাড়াও, জিএস ক্রেডিট স্কোর উন্নত করার জন্য ক্রেডিট রেফারেন্স এজেন্সি এক্সপেরিয়ানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
এক্সপেরিয়ান পরামর্শ দিয়েছে যে তিনি যেন বন্ধক সরবরাহকারীর কাছে তার পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন এবং আদালতের রায় পেশ করেন, যাতে তারা কোনো সমাধান দিতে পারে। যদি সেটি সম্ভব না হয়, তাহলে তিনি তিনটি প্রধান ক্রেডিট রেফারেন্স এজেন্সির কাছে একটি লিখিত বিবৃতি জমা দিতে পারেন, যেখানে তিনি ঘটনার বিবরণ দেবেন এবং সম্ভাব্য ঋণদাতাদের কাছে সহায়ক প্রমাণ উপস্থাপন করবেন।
যদিও এতে তার ক্ষতিগ্রস্ত স্কোর পুনরুদ্ধার হবে না, তবে ভবিষ্যতে ঋণ আবেদন করার সময় এটি সহায়ক হতে পারে।
এই ঘটনাটি আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দেয়। বিবাহ বিচ্ছেদের সময় এবং পরে আর্থিক বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি।
বিশেষ করে, যৌথ সম্পত্তি বা ঋণের ক্ষেত্রে, উভয় পক্ষেরই নিজেদের অধিকার এবং দায়বদ্ধতা সম্পর্কে ভালোভাবে জানা উচিত। আমাদের দেশেও, বিবাহ বিচ্ছেদের পর আর্থিক সুরক্ষার জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
সম্পত্তি এবং ঋণ সংক্রান্ত বিষয়ে আদালতের স্পষ্ট নির্দেশনা এবং আর্থিক পরিকল্পনা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান