মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ আরও তীব্র হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। দুই দেশের মধ্যে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে, পরিস্থিতি এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে সমঝোতার সম্ভাবনা ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসছে।
অন্যদিকে যেমন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলছেন চীন একটি বাণিজ্য চুক্তি করতে চাইছে, অন্যদিকে বেইজিং এই ধরনের ‘অর্থনৈতিক চাপ’ প্রত্যাখ্যান করেছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলোর খবর অনুযায়ী, ট্রাম্প সম্প্রতি জানিয়েছেন যে তিনি বেইজিং থেকে আলোচনার জন্য একটি টেলিফোনের অপেক্ষায় রয়েছেন। তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলার পর উল্লেখ করেন যে, অনেক দেশই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অর্থনৈতিক আলোচনা শুরু করতে আগ্রহী।
ট্রাম্পের দাবি, চীনও দ্রুত একটি চুক্তি করতে চাইছে, কিন্তু কিভাবে আলোচনা শুরু করা যায়, সে বিষয়ে তারা অবগত নয়।
তবে, ট্রাম্পের এই কথার কয়েক ঘণ্টা পরেই একজন শীর্ষস্থানীয় মার্কিন কর্মকর্তা বেইজিংয়ের সমঝোতার আগ্রহ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। ওই কর্মকর্তা জানান, চীন প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা আগামী দিনগুলোতে কোনো সমাধানে পৌঁছানো কঠিন করে তুলেছে।
বর্তমানে, চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যদি চীন তাদের প্রতিশোধমূলক শুল্ক প্রত্যাহার না করে, তাহলে কিছু চীনা পণ্যের ওপর ১০৪ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বাড়ানো হতে পারে।
তবে চীন স্পষ্ট করে দিয়েছে যে তারা কোনো প্রকার চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি বাণিজ্য যুদ্ধ চায়, তবে চীনও শেষ পর্যন্ত এর মোকাবেলা করবে।
এই বাণিজ্য যুদ্ধের কারণ হিসেবে মূলত উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি এবং অর্থনৈতিক প্রভাব বিস্তারের আকাঙ্ক্ষা কাজ করছে। গত বছর যুক্তরাষ্ট্র চীন থেকে প্রায় ৪৩৮.৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে, যেখানে চীনে যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১৪৩.৫ বিলিয়ন ডলার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বাণিজ্য যুদ্ধের ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে এবং এর প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও পড়তে পারে। কারণ, বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থায় কোনো ধরনের পরিবর্তন আসলে, তা বাংলাদেশের বাণিজ্য, বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। তাই, এই পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা