পানামা খাল নিয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। সম্প্রতি, মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব (Secretary of Defense) পিট হেগসেথ অভিযোগ করেছেন যে পানামা খালের নিরাপত্তা হুমকির মুখে এবং এর পেছনে চীনের হাত রয়েছে।
এর প্রতিক্রিয়ায় চীন সরকার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ এনেছে।
মঙ্গলবার (স্থানীয় সময়), পানামার প্রেসিডেন্ট জোসে রাউল মুলিনোর সঙ্গে বৈঠকের পর হেগসেথ নতুন একটি মার্কিন অর্থায়নে তৈরি হওয়া ডকের উদ্বোধন করেন। এরপর তিনি বলেন যুক্তরাষ্ট্র পানামা খালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং চীন বা অন্য কোনো দেশকে এর কার্যকারিতা নষ্ট করতে দেবে না।
হেগসেথ উল্লেখ করেন যে, খালের কাছাকাছি কিছু গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো বর্তমানে হংকং ভিত্তিক একটি কনসোর্টিয়ামের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এই কনসোর্টিয়াম তাদের নিয়ন্ত্রণকারী অংশীদারিত্ব ব্ল্যাকরক ইনকর্পোরেটেডের (BlackRock Inc.) কাছে বিক্রি করতে যাচ্ছে।
হেগসেথের মতে, এর ফলে চীন পানামাতে নজরদারির কার্যক্রম চালাতে পারে, যা যুক্তরাষ্ট্র এবং পানামার জন্য নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের ক্ষেত্রে উদ্বেগের কারণ।
অন্যদিকে, চীনের দূতাবাস এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে “ব্ল্যাকমেইল”-এর অভিযোগ এনেছে এবং বলেছে, পানামার বাণিজ্যিক সম্পর্ক নির্ধারণের স্বাধীনতা রয়েছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ করার কোনো অধিকার নেই।
দূতাবাসের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের এই ধরনের পদক্ষেপ তাদের নিজস্ব ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা।
এই বিতর্কের সূত্রপাত হয় যখন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযোগ করেন যে, পানামা খাল ব্যবহারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অতিরিক্ত চার্জ করা হচ্ছে এবং চীনের এখানে প্রভাব রয়েছে।
যদিও পানামার পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে পানামা খালের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছিল।
পরবর্তীতে, ১৯৭৭ সালের একটি চুক্তির মাধ্যমে ১৯৯৯ সালে এটি পানামার কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পানামা খাল একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পথ। এখানে যেকোনো ধরনের অস্থিরতা বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে, উভয় দেশের মধ্যে উত্তেজনা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য একটি উদ্বেগের বিষয়।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান