ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কমান্ডারকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছেন দেশটির একজন সাবেক ব্রিগেড কমান্ডার।
সম্প্রতি পদত্যাগ করা আজভ ব্রিগেডের প্রাক্তন চিফ অফ স্টাফ বোহদান ক্রোটেভিচ সরাসরি বর্তমান সামরিক প্রধান জেনারেল ওলেক্সান্ডার সিরস্কির কঠোর সমালোচনা করেছেন।
তার মতে, সিরস্কির নেতৃত্ব যুদ্ধের কৌশল নির্ধারণে ভুল করছেন, যা ইউক্রেনীয় সেনাদের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলছে।
ফেব্রুয়ারি মাসে আজভ ব্রিগেড থেকে পদত্যাগ করেন ক্রোটেভিচ।
তার প্রধান কারণ ছিল, তিনি এই বিষয়ে মুখ খুলতে চেয়েছিলেন।
তিনি অভিযোগ করেন, জেনারেল সিরস্কি এবং বর্তমান সামরিক নেতৃত্ব ‘পুরো সেনাবাহিনীর ম্যানুয়াল মাইক্রো-ম্যানেজমেন্ট’ করছেন।
সেনাদের জন্য এমন কিছু নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে যা ‘সীমান্ত পর্যায়ের অপরাধমূলক’।
ক্রোটেভিচের ভাষ্যমতে, সেনাদের ফ্রন্ট লাইনের কাছাকাছি বিশ্রাম নিতে বাধ্য করা হচ্ছে।
সৈন্যদের বিশ্রাম নেওয়ার এই জায়গাটি প্রায়ই গোলন্দাজ ঘাঁটি থেকে মাত্র ৫০ মিটার দূরে থাকে।
তার মতে, এমন পরিস্থিতিতে সেনাদের জীবন মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে।
তিনি আরও বলেন, যুদ্ধের আধুনিক ধারণা সম্পর্কে সামরিক কমান্ডের কোনো ধারণা নেই।
বিশেষ করে, এফপিভি ড্রোন এবং গ্লাইড বোমা কীভাবে কাজ করে, সে সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা নেই।
সাবেক এই সেনা কর্মকর্তার মতে, রাশিয়া বর্তমানে ব্যাপক পরিমাণে এফপিভি ড্রোন এবং গ্লাইড বোমা ব্যবহার করছে, যা প্রতিরোধের ক্ষেত্রে ইউক্রেন এখনো বেশ পিছিয়ে আছে।
অথচ, ইউক্রেনীয় কমান্ডাররা এখনো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মানসিকতা নিয়ে যুদ্ধ করছেন।
তারা নতুন কৌশলগুলো উপলব্ধি করতে পারছেন না।
ক্রোটেভিচ জানান, সৈন্যদের বিশ্রাম বিষয়ক নিয়মাবলি ২০১৬ সালের পুরোনো একটি নির্দেশিকার ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।
সেই সময়ে যুদ্ধের পরিস্থিতি এখনকার চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন ছিল।
ক্রোটেভিচ ২০১৪ সাল থেকে আজভ ব্রিগেডে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি আজভস্টাল ইস্পাত কারখানায় রাশিয়ার আক্রমণের সময়ও সেখানে ছিলেন।
রাশিয়ার হাতে বন্দী হওয়ার পর তিনি মুক্তি পান এবং পরে আবার ফ্রন্টে ফিরে আসেন।
তিনি জানান, কমান্ডাররা এখনো এমন সব কাজের নির্দেশ দেন যা তারা নিজেরা করতে চান না।
তাই তিনি ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনী থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ক্রোটেভিচ এখন ‘স্ট্র্যাটেজিক অপারেশনাল অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি’ (সোইয়া) নামে একটি বেসরকারি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চান।
এই সংস্থা রাশিয়া, বেলারুশ, উত্তর কোরিয়া এবং ইউক্রেনের প্রতিপক্ষ দেশগুলোর বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করবে।
একইসঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে বিশেষজ্ঞ হিসেবে যোগাযোগ রক্ষা করবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান