গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে (ডিআরসি) ব্যর্থ অভ্যুত্থান চেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত তিন মার্কিন নাগরিককে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। গত সপ্তাহে কঙ্গোর কর্তৃপক্ষ তাদের মৃত্যুদণ্ডের সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে পরিবর্তন করার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কঙ্গো এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আলোচনার ফলস্বরূপ এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
জানা যায়, এই তিন মার্কিন নাগরিক হলেন মার্সেল মালঙ্গা, টাইলার থম্পসন জুনিয়র এবং বেঞ্জামিন রুবেন জালমান-পোলন। গত মে মাসে মার্সেল মালঙ্গার বাবা ক্রিশ্চিয়ান মালঙ্গার নেতৃত্বে হওয়া এক ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থান চেষ্টার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তাঁদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
সামরিক আদালতে মোট ৩৭ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
ওই অভ্যুত্থান প্রচেষ্টায় কঙ্গোর রাষ্ট্রপতি প্রাসাদের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে বিরোধী দলের নেতা ক্রিশ্চিয়ান মালঙ্গাসহ অন্তত ছয় জন নিহত হন। কঙ্গোর রাষ্ট্রপতির মুখপাত্র টিনা সালামা আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা সিএনএনকে জানান, “এই তিন জন তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের মেয়াদ যুক্তরাষ্ট্রে কাটাবেন।”
তিনি আরও জানান, এই তিন মার্কিন নাগরিককে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এর আগে, তিনি বলেছিলেন যে এই সাজা মওকুফের সিদ্ধান্ত পাবলিক প্রসিকিউটর দাখিল করেছিলেন এবং কঙ্গোর বিচারমন্ত্রীর সুপারিশের ভিত্তিতে তা কার্যকর করা হয়।
কঙ্গো প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এই তিনজনের প্রত্যাবাসন বিচার বিভাগীয় কূটনীতি এবং দুই দেশের মধ্যে ন্যায়বিচার ও মানবাধিকারের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করার একটি চলমান প্রচেষ্টার অংশ।”
এই ঘটনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের মধ্যে একটি সম্ভাব্য ‘নিরাপত্তার বিনিময়ে খনিজ সম্পদ’ বিষয়ক অংশীদারিত্বের পথ সুগম হতে পারে। বর্তমানে কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে চলমান যুদ্ধ চলছে, যা দেশটির খনিজ সম্পদ সমৃদ্ধ অঞ্চলে অস্থিরতা তৈরি করেছে।
গত সপ্তাহে, কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স টিশেকেনি রাজধানী কিনশাসায় সফররত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আফ্রিকা বিষয়ক সিনিয়র উপদেষ্টা মাসাদ বোলোস এবং আফ্রিকান বিষয়ক উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী কোরিনা স্যান্ডার্সের সঙ্গে বৈঠক করেন।
এই আলোচনার ফলস্বরূপ, উভয় পক্ষ দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে একমত হয়েছে। প্রথমত, কঙ্গোর আঞ্চলিক অখণ্ডতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে একটি স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করা এবং দ্বিতীয়ত, খনিজ খাতে বেসরকারি বিনিয়োগসহ অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করা।
টিনা সালামা ৩রা এপ্রিল এক টুইট বার্তায় এই তথ্য জানান।
তথ্য সূত্র: সিএনএন