যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল সয়াবিনের বাজার। এই বাণিজ্য যুদ্ধে, উভয় দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে শুল্ক আরোপ করছে, যার ফলে বিশ্বজুড়ে সয়াবিনের বাণিজ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে।
সম্প্রতি, ইউরোপীয় ইউনিয়নও (EU) এই শুল্ক যুদ্ধের প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
**শুল্ক যুদ্ধ: সয়াবিন কি যুক্তরাষ্ট্রের দুর্বলতা?**
যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরেই সয়াবিন উৎপাদনে শীর্ষস্থানীয় এবং বিশ্ববাজারে এর একটি বিশাল অংশীদারিত্ব রয়েছে। কিন্তু চীন, যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সয়াবিন ক্রেতা, এই বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে বিকল্প বাজারের দিকে ঝুঁকছে।
এর ফলে, যুক্তরাষ্ট্রের কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, কারণ তাদের উৎপাদিত সয়াবিনের চাহিদা কমছে।
চীনের পদক্ষেপের জবাবে, ইউরোপীয় ইউনিয়নও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে শুল্ক আরোপের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই পদক্ষেপের ফলে, যুক্তরাষ্ট্রের অ্যালুমিনিয়াম, ইস্পাত এবং কৃষি পণ্য, বিশেষ করে সয়াবিনের বাজারে প্রভাব পড়বে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই সিদ্ধান্তের ফলে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে আরও চাপ সৃষ্টি হতে পারে।
**যুক্তরাষ্ট্রের কৃষকদের উপর প্রভাব**
যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কৃষক এই বাণিজ্য যুদ্ধ বন্ধের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের মতে, শুল্কের কারণে সয়াবিনের দাম কমে যাওয়ায় তারা লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছেন।
কিছু কৃষক আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, এই বাণিজ্য যুদ্ধ দীর্ঘকাল চললে তাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে, ব্রাজিল সয়াবিন রপ্তানিতে উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। চীন ব্রাজিল থেকে সয়াবিন আমদানি বাড়িয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি বড় উদ্বেগের কারণ।
**বাংলাদেশের জন্য এর প্রভাব**
যদিও বাংলাদেশ সরাসরিভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিনের বড় আমদানিকারক নয়, তবে বিশ্ব বাজারের এই অস্থিরতা আমাদের দেশেও প্রভাব ফেলতে পারে। আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিনের দাম বাড়লে, ভোজ্য তেল ও পশুখাদ্যের দাম বাড়তে পারে, যা স্থানীয় বাজারেও প্রভাব ফেলবে।
বিশ্ব অর্থনীতির এই জটিল পরিস্থিতিতে, বাণিজ্য যুদ্ধ এবং শুল্ক আরোপের ফলে বিভিন্ন দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও কঠিন হয়ে উঠছে। এই ধরনের ঘটনা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি উদ্বেগের কারণ, যা বিভিন্ন দেশের বাজারে অস্থিরতা তৈরি করতে পারে।
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা