গাজা শহরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ২৩ জন নিহত, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। বুধবার গাজা শহরের শিজাইয়া নামক একটি আবাসিক এলাকায় এই হামলা চালানো হয়।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং আল-আহলি হাসপাতাল সূত্রে এই হতাহতের খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, হামলায় একটি চারতলা ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া ব্যক্তিদের উদ্ধারের জন্য উদ্ধারকর্মীরা কাজ করছেন।
হামলায় নিহতদের মধ্যে আটজন নারী ও আটজন শিশু রয়েছে। হামাস-কর্তৃক পরিচালিত বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগ জানিয়েছে, পার্শ্ববর্তী ভবনগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, তারা শিজাইয়া এলাকা থেকে আসা একটি হামাস জঙ্গিকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। তবে তারা নিহত জঙ্গির নাম প্রকাশ করেনি।
ইসরায়েল বেসামরিক হতাহতের জন্য হামাসকে দায়ী করেছে, কারণ হামাস ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় অবস্থান নেয়।
এদিকে, হামাস জিম্মিদের মুক্তি দিতে রাজি না হওয়ায় গাজায় চাপ বাড়াচ্ছে ইসরায়েল। গাজার কিছু অংশে, বিশেষ করে শিজাইয়াতে ব্যাপক হারে বাসিন্দাদের সরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে তারা।
খাদ্য, জ্বালানি এবং মানবিক সহায়তা বন্ধ করে দেওয়ায় সেখানকার সাধারণ মানুষ চরম খাদ্য সংকটে পড়েছে। ইসরায়েল ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের একটি বড় অংশ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে এবং সেখানে একটি নতুন নিরাপত্তা করিডোর তৈরি করতে চাইছে।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা যায়, গত মাসে যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর হামাস দক্ষিণ ইসরায়েলে শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা করে যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টা চলছে, তবে এখনো পর্যন্ত কোনো সমাধানে আসা যায়নি।
হামাস তাদের হাতে থাকা ৫৯ জন জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি, তবে তারা যুদ্ধ বন্ধের পরেই এই কাজ করতে চায়।
গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় প্রায় ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছিল। এর জবাবে ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধ শুরু করে, যা ফিলিস্তিনিদের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে গাজায় মানবিক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে এবং এর প্রভাব পুরো অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তবে জিম্মিদের মুক্তি এবং যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি।
ট্রাম্প গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে নিজের একটি পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন, যা মধ্যপ্রাচ্যের মিত্রদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
অন্যদিকে, নেতানিয়াহু তার কট্টর-ডানপন্থী মিত্রদের চাপে রয়েছেন, যারা হামাসকে সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করার জন্য যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৫০,০০০ এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা অর্ধেকের বেশি।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান