ভবিষ্যতে আকাশপথে ভ্রমণের ধারণাটাই হয়তো বদলে যেতে চলেছে। আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল সংস্থা (ICAO) যাত্রী-সাধারণের জন্য ভ্রমণকে আরও সহজ করতে কিছু যুগান্তকারী পরিবর্তনের পরিকল্পনা করছে।
শোনা যাচ্ছে, এই পরিবর্তনের ফলে বিমানে ওঠার জন্য বোর্ডিং পাস এবং বিমানবন্দরের চেক-ইন-এর মতো ঝক্কি হয়তো অতীত হতে পারে।
পরিবর্তনের মূল ভিত্তি হলো ‘ডিজিটাল ট্রাভেল ক্রেডেনশিয়াল’-এর ব্যবহার। এই নতুন পদ্ধতিতে, যাত্রীরা তাদের স্মার্টফোনে পাসপোর্টের তথ্য সংরক্ষণ করতে পারবেন।
এর ফলে, বিমানবন্দরে প্রবেশের সময় অথবা বিমানে ওঠার আগে, কাগজের বোর্ডিং পাসের বদলে, মুখের স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে দ্রুত শনাক্তকরণ করা যাবে।
এছাড়াও, টিকিট বুক করার পরেই যাত্রীদের ফোনে একটি ‘জার্নি পাস’ চলে আসবে, যেখানে তাদের ভ্রমণের সমস্ত তথ্য, যেমন – বিমানের সময়সূচী, গেট নম্বর ইত্যাদি আপ-টু-ডেট থাকবে।
এই পরিবর্তনের ফলে বিমানবন্দরের অবকাঠামোতেও কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তি এবং মোবাইল ডিভাইস থেকে পাসপোর্ট স্ক্যান করার মতো সুবিধা যুক্ত করতে হবে।
বর্তমানে, বিমান সংস্থাগুলির পুরনো পদ্ধতির কারণে অনেক সময় যাত্রী-সাধারণকে নানান অসুবিধায় পড়তে হয়। এই নতুন প্রযুক্তি সেই সমস্যাগুলো দূর করতে সাহায্য করবে।
এ বিষয়ে ট্রাভেল টেকনোলজি কোম্পানি অ্যামাডিয়াসের পণ্য ব্যবস্থাপনা পরিচালক ভ্যালেরি ভিয়ালের মতে, গত ৫০ বছরে বিমান চলাচলে এত বড় পরিবর্তন আর ঘটেনি। তার মতে, ২০০০ সালের শুরুর দিকে ই-টিকিটিং চালুর পর এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হতে চলেছে।
নতুন এই প্রযুক্তির ফলে যাত্রী-সাধারণের তথ্যের গোপনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে। তবে অ্যামাডিয়াস জানিয়েছে, তারা এমন একটি ব্যবস্থা তৈরি করেছে, যেখানে যাত্রীদের তথ্য বিমানবন্দরের প্রতিটি টাচপয়েন্ট-এর ১৫ সেকেন্ডের মধ্যে মুছে ফেলা হবে।
শুধু তাই নয়, কোনো কারণে ফ্লাইট বিলম্বিত হলে, যাত্রীদের পরবর্তী ফ্লাইটের বিস্তারিত তথ্য তাদের ফোনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পৌঁছে যাবে। তাদের জার্নি পাসও স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপডেট হবে।
এর ফলে, ট্রাভেলিংয়ের অভিজ্ঞতা আরও মসৃণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী তিন বছরের মধ্যে এই পরিবর্তনগুলি কার্যকর হতে পারে।
তথ্যসূত্র: The Guardian