নর্ওয়েতে এক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের স্মরণে নির্মিত হতে যাচ্ছে একটি জাতীয় স্মৃতিসৌধ।
২০১১ সালের ২২শে জুলাই দেশটির ইতিহাসে কলঙ্কজনক সেই দিনে, চরমপন্থীদের বর্বরোচিত হামলায় নিহত হয়েছিলেন নিরীহ ৭৬ জন মানুষ।
রাজধানী অসলোর কেন্দ্রে বোমা হামলায় আটজন এবং পরবর্তীতে একটি দ্বীপে (Utøya) শ্রমিক দলের যুবকদের ওপর বন্দুক হামলায় আরও ৬৯ জন নিহত হন।
এই ঘটনার ১৪ বছর পর, শোক আর ঘৃণার সেই স্মৃতিকে নতুন করে জাগিয়ে তুলতে, নিহতদের প্রতি সম্মান জানাতে এবং ভবিষ্যতে এমন নৃশংসতা প্রতিরোধ করার লক্ষ্যে তৈরি হচ্ছে স্মৃতিসৌধটি।
শিল্পী মাতিয়াস ফালদবাক্কেন-এর ডিজাইন করা এই স্মৃতিসৌধটি তৈরীর জন্য প্রায় তিন বছর ধরে বিভিন্ন পর্যায়ে বাছাই প্রক্রিয়া চলেছে।
অবশেষে, একটি বিশেষ জুরি বোর্ডের মাধ্যমে এই ডিজাইনটি চূড়ান্ত করা হয়েছে।
স্মৃতিসৌধটি তৈরি হবে বিশাল আকারের মোজাইক (mosaic) পদ্ধতিতে, যা প্রায় ১২ মিটার উঁচু এবং ১৫ মিটার প্রশস্ত হবে।
এতে প্রায় পাঁচ লক্ষ পাথরের টুকরো ব্যবহার করা হবে।
নকশাটিতে একটি পাখির ছবি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, যা দ্বীপের একটি বিশেষ পাখি এবং প্রকৃতির প্রতিচ্ছবি।
ফালদবাক্কেন মনে করেন, মোজাইক হলো এমন একটি মাধ্যম যা আগুন, ভূমিকম্প বা বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগেও টিকে থাকতে পারে এবং যা অনন্তকাল ধরে স্থায়ী হবে।
এই স্মৃতিসৌধের প্রধান উদ্দেশ্য হলো, অতীতের সেই ভয়াবহ ঘটনার স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে কাজ করা এবং একই সঙ্গে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সতর্কবার্তা তৈরি করা।
স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন থেকে শুরু করে এর নির্মাণকাজে নিহতদের পরিবার এবং হামলায় জীবিতদেরও যুক্ত করা হবে।
যারা স্বজন হারিয়েছেন, তাদের শোকের গভীরতা অনুভব করা এবং তাদের অনুভূতিকে সম্মান জানানোই এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য।
নর্ওয়ের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এবং বর্তমানে দেশটির অর্থমন্ত্রী ইয়েন্স স্টলটেনবার্গ এই প্রসঙ্গে বলেন, “সন্ত্রাসবাদ বা চরমপন্থা রুখতে কোনো নির্দিষ্ট ব্যবস্থা চূড়ান্ত গ্যারান্টি দিতে পারে না।
তবে, এই স্মৃতিসৌধ আমাদের মনে করিয়ে দেবে এমন একটি ঘটনার কথা যা আমরা আর কখনো দেখতে চাই না।
এটি আমাদের মুক্ত ও উদার সমাজের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।
স্মৃতিসৌধটি ২০২২ সালের ভয়াবহ হামলার ১৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে উন্মোচন করা হবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান