সোফি গিলবার্টের নতুন বই ‘গার্ল অন গার্ল: হাউ পপ কালচার টার্নড আ জেনারেশন অফ উইমেন এগেইনস্ট দেমসেলভস’ নারীদের প্রতি পপ সংস্কৃতির দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে একটি গভীর আলোচনা উপস্থাপন করেছে। বইটি মূলত ১৯৯০ এর দশক থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত নারীদের উপর পপ সংস্কৃতির প্রভাব বিশ্লেষণ করে।
একজন পুলিৎজার পুরস্কারের জন্য মনোনীত সাংবাদিক এবং আটলান্টিকের সমালোচক, গিলবার্ট দেখিয়েছেন কিভাবে জনপ্রিয় সংস্কৃতি নারীদের নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতার দিকে ঠেলে দিয়েছে, যা তাদের মধ্যে আত্ম-সন্দেহ এবং সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
বইটিতে, গিলবার্ট পপ সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক যেমন সঙ্গীত, রিয়েলিটি টিভি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারীদের উপস্থাপন কীভাবে তাদের জীবনকে প্রভাবিত করেছে, তা তুলে ধরেছেন। ব্রিটনি স্পিয়ার্স, কার্দাশিয়ান পরিবারের মতো ব্যক্তিত্বদের উদাহরণ দিয়ে তিনি দেখান কিভাবে এই সংস্কৃতি নারীদের দুর্বল করে তোলে এবং তাদের মধ্যে বিদ্যমান ক্ষমতাকে নস্যাৎ করে।
এছাড়াও, ফ্যাশন এবং সৌন্দর্য্য বিষয়ক ধারণাগুলো কীভাবে নারীদের নিজেদের সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করতে সহায়তা করে, সে বিষয়েও আলোকপাত করা হয়েছে।
গিলবার্ট তার লেখায় ম্যাডোনা, র্যাচেল কাস্ক, শিলা হেটি এবং ক্রিস ক্রাউসের মতো লেখকদের কাজের প্রশংসা করেছেন, যারা নারীদের নিজস্ব কণ্ঠস্বর তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। যদিও সমালোচক মনে করেন, বইটিতে আরও কিছু সমাধানের প্রস্তাবনা থাকলে ভালো হতো।
যেমন, নারীদের ক্ষমতায়নের জন্য প্রেম এবং ভালোবাসার ধারণাটিকে লেখক আরো বিস্তারিতভাবে আলোচনা করতে পারতেন।
সমালোচকরা মনে করেন, এই বইয়ে পপ সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক উন্মোচন করা হয়েছে, যা নারীদের নিজেদের সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে উৎসাহিত করে। বিশেষ করে, মি টু আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে, বইটি সমাজের চোখে নারীর অবস্থান এবং তাদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে সহায়তা করতে পারে।
এই বইয়ে, লেখক পুরুষতান্ত্রিক সমাজের চাপ এবং নারীদের উপর এর প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
তবে, সমালোচক মনে করেন, বইটির কিছু দুর্বলতাও রয়েছে। যেমন, পর্নোগ্রাফির নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা করা হলেও, এর ভালো দিকগুলো নিয়ে তেমন কিছু বলা হয়নি।
এছাড়াও, লেখক তার নিজের মতামত আরও স্পষ্টভাবে প্রকাশ করতে পারতেন।
সব মিলিয়ে, ‘গার্ল অন গার্ল’ বইটি নারীদের উপর পপ সংস্কৃতির প্রভাব সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা। এটি পাঠকদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে এবং সমাজে নারীর অবস্থানকে আরও ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করতে পারে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান