মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, বাইডেন প্রশাসনের আমলে কোনো ধরনের খ্রিষ্টান-বিরোধী বৈষম্যের অভিযোগ থাকলে তা জানাতে হবে। পবিত্র ইস্টার সানডে’র প্রাক্কালে, ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে এই নির্দেশ আসে।
কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো এক বার্তায় জানানো হয়েছে, এই সময়ের মধ্যে যদি কারো ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে কোনো বৈষম্যের শিকার হতে হয়, তবে তা কর্তৃপক্ষের নজরে আনতে হবে।
পররাষ্ট্র দপ্তরের এই পদক্ষেপ এমন এক সময়ে এসেছে, যখন কর্মীদের মধ্যে দপ্তরটির ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। জানা গেছে সোমবার হোয়াইট হাউসে সরকারি কর্মদক্ষতা বিষয়ক দপ্তরের পক্ষ থেকে বাজেট এবং কর্মী ছাঁটাই সংক্রান্ত একটি নতুন প্রস্তাব পেশ করা হবে।
ধারণা করা হচ্ছে, এতে স্বেচ্ছায় অবসর এবং পদত্যাগ সংক্রান্ত হিসাব তুলে ধরা হবে, যা পরবর্তীতে কর্মী ছাঁটাইয়ের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
সূত্র বলছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (USAID)-এর বিলুপ্তি তদারকি করা রাজনৈতিক নিয়োগপ্রাপ্ত পিট মারোকো সম্প্রতি পররাষ্ট্র দপ্তর ত্যাগ করেছেন। যদিও পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র তামি ব্রুস এর আগে জানিয়েছিলেন, মারোকোকে “রাষ্ট্রপতির অগ্রাধিকারের সাথে মার্কিন সরকারের সকল বৈদেশিক সহায়তা সমন্বিত করার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব” পালনের জন্য আনা হয়েছিল।
অন্যদিকে, কর্মীদের মধ্যে অনেকেই আশঙ্কা করছেন, পররাষ্ট্র দপ্তরের পুনর্গঠন নিয়ে হোয়াইট হাউসে পেশ করা হতে যাওয়া চূড়ান্ত প্রস্তাবে এখনো অনেক অস্পষ্টতা রয়েছে। বিশেষ করে, যারা বিদেশি এবং সিভিল সার্ভিসে কাজ করেন, তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে।
এমন পরিস্থিতিতে, দপ্তরটি তার নীতি ও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ধর্মীয় বৈষম্য দূর করার উদ্যোগ নিয়েছে। এই লক্ষ্যে, বিশেষ করে বাইডেন প্রশাসনের সময়কালে সংঘটিত খ্রিষ্টান-বিরোধী কার্যকলাপের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তাদের পাঠানো ওই বার্তায় বলা হয়েছে, কর্মীদের মধ্যে যারা খ্রিষ্টান অথবা যারা তাদের অধিকারের পক্ষে কথা বলেন, তাদের প্রতি কোনো ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণ করা হলে, তা জানাতে হবে। অভিযোগের ভিত্তিতে একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করা হবে এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এমনকি, পরিচয় গোপন রেখেও অভিযোগ জানানোর সুযোগ রয়েছে।
বার্তায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, কেউ যদি কোভিড-১৯ টিকা নিতে অস্বীকৃতি জানান অথবা ধর্মীয় ছুটির কারণে সরকারি বিধিনিষেধ মানতে না পারেন, তবে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না।
একইভাবে, ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নিতে অস্বীকার করলে অথবা ব্যক্তিগত পছন্দের সর্বনাম (pronoun) ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনো বৈষম্য করা হলে, সে বিষয়েও অভিযোগ জানানো যাবে।
সরকারি ভবনে ধর্মীয় পতাকা বা প্রতীক প্রদর্শনে বাধা দেওয়া অথবা সরকারি মিডিয়া কন্টেন্টের বিষয়ে আপত্তি জানানো হলে, সেক্ষেত্রেও অভিযোগ করার সুযোগ রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে কর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে, মানবাধিকার বিষয়ক অফিসের প্রধান হিসেবে সম্প্রতি একজন জুনিয়র কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়ায় অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস