পাকিস্তানের মাটিতে বৈশাখীর উৎসবে যোগ দিতে হাজার হাজার শিখ ধর্মাবলম্বীর আগমন ঘটেছে। এই উৎসবটি মূলত একটি শস্য উৎসব যা শিখ নববর্ষের সূচনা করে।
প্রতি বছর এই সময়ে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য এবং পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে উৎসবের আমেজ লাগে। এবার পাকিস্তান সরকার ৬,৫০০ জনের বেশি ভারতীয় শিখকে ভিসা দিয়েছে, যা আগের বছরগুলোর তুলনায় অনেক বেশি।
সাধারণত, দুই দেশের মধ্যে ভ্রমণ ভিসা পাওয়া কঠিন হলেও, ধর্মীয় স্থানগুলোতে তীর্থযাত্রীদের ভ্রমণের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
গুরু নানকের জন্মস্থান, নানকানা সাহিবে বৈশাখীর প্রধান অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়। গুরু নানক শিখ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।
লাহোর থেকে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত নানকানা সাহিবে গুরুদ্বার জনম স্থান-সহ মোট নয়টি শিখ উপাসনালয় রয়েছে।
ভারত থেকে আসা তীর্থযাত্রী রিঙ্কো কৌর জানান, পাকিস্তানে আসার আগে তাঁর পরিবার তাঁকে সতর্ক করেছিল। তাঁর মনে কিছুটা দ্বিধা ছিল।
তবে এখানকার মানুষের উষ্ণ অভ্যর্থনা দেখে তিনি অভিভূত। “আমি দেখেছি, মানুষজন তাঁদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে আমাদের স্বাগত জানাচ্ছে। আমাদের সেলিব্রিটিদের মতো মনে হচ্ছে,” তিনি বলেন।
রিঙ্কো কৌর পাকিস্তানের অন্যান্য শিখ পবিত্র স্থানগুলোও পরিদর্শন করার পরিকল্পনা করছেন।
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশরা ভারত উপমহাদেশকে বিভক্ত করার পর, অনেক শিখ তীর্থস্থান পাকিস্তানে অবস্থিত।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ বৈশাখীকে কৃষকদের জন্য আনন্দের সময় হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি আরও যোগ করেন, এই উৎসব সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে আশা, ঐক্য এবং পুনরুজ্জীবনের অনুভূতি জাগায়।
বাংলাদেশের নবান্নের মতো, বৈশাখীও নতুন ফসলের আগমনকে চিহ্নিত করে, যা এই অঞ্চলের মানুষের জীবনে আনন্দ ও সমৃদ্ধি নিয়ে আসে।
বৈশাখের এই উৎসব শিখ সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ। এটি তাঁদের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা