মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইলন মাস্কের সমালোচনা করেছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, এই দুই প্রভাবশালী ব্যক্তি দেশটির সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোতে আঘাত হানছেন।
বাইডেনের মতে, এটি যুক্তরাষ্ট্রের বয়স্ক এবং অক্ষম নাগরিকদের জন্য একটি ‘পবিত্র প্রতিশ্রুতি’, যা তাদের জীবন ধারণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
শিকাগোতে ‘অ্যাডভোকেটস, কাউন্সেলরস অ্যান্ড রিপ্রেজেন্টেটিভস ফর দ্য ডিজেবলড’-এর জাতীয় সম্মেলনে দেওয়া ভাষণে বাইডেন বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন ফেডারেল সরকারের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্রুত পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছে।
তিনি উল্লেখ করেন, সামাজিক নিরাপত্তা প্রশাসনের কর্মী ছাঁটাই এবং কার্যালয় বন্ধ করার মতো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, যা উদ্বেগের কারণ। বাইডেন এটিকে ‘বিপর্যয়’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, এর ফলে কয়েক কোটি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা (Social Security System) মূলত একটি ফেডারেল প্রোগ্রাম, যা অবসরপ্রাপ্ত, অক্ষম এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করে।
এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে প্রতি মাসে কয়েক কোটি আমেরিকান তাদের প্রয়োজনীয় অর্থ পেয়ে থাকেন। বাইডেন জোর দিয়ে বলেন, ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্ট এই ব্যবস্থা চালু করার পর থেকে, যুদ্ধ, মন্দা বা মহামারীর মতো কঠিন সময়েও মানুষ নিয়মিত তাদের সামাজিক নিরাপত্তা চেক পেয়েছেন।
কিন্তু এখন, এই নিয়মের পরিবর্তন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বাইডেন তাঁর বক্তব্যে ইলন মাস্কের তীব্র সমালোচনা করেন, যিনি সামাজিক নিরাপত্তা প্রোগ্রামকে ‘পঞ্জি স্কিম’ বলে অভিহিত করেছেন। এছাড়া, ট্রাম্পের বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিকের একটি মন্তব্যেরও সমালোচনা করেন বাইডেন।
লুটনিক বলেছিলেন, তাঁর ৯৪ বছর বয়সী শাশুড়ি সামাজিক নিরাপত্তা চেক না পেলেও সম্ভবত কোনো অভিযোগ করবেন না। বাইডেন এর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, একজন বিলিয়নিয়ারের শাশুড়ি সম্ভবত এই বিষয়ে অভিযোগ করবেন না, তবে একা বসবাসকারী একজন ৯৪ বছর বয়সী বৃদ্ধার ক্ষেত্রে এটি ভিন্ন হতে পারে।
অন্যদিকে, ট্রাম্প প্রশাসন এরই মধ্যে একটি নির্দেশিকা জারি করেছে, যেখানে অবৈধ অভিবাসীদের সামাজিক নিরাপত্তা সুবিধা পেতে বাধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
যদিও, যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, অবৈধ অভিবাসীরা এমনিতেই এই সুবিধার যোগ্য নন। বাইডেন তাঁর ভাষণে দেশের বিভাজন নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং আমেরিকান মূল্যবোধ সমুন্নত রাখার আহ্বান জানান।
তিনি উল্লেখ করেন, দেশের প্রায় ৩০ শতাংশ মানুষের মধ্যে ‘হৃদয়’ নেই।
সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বিতর্কের মাঝে, বাইডেনের এই বক্তব্য দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকের মতে, এটি আসন্ন নির্বাচনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হতে পারে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান